মোহনবাগান (Mohun Bagan) ফিরল একেবারে চেনা ছন্দে| এই সবুজ-মেরুনকেই বিগত কয়েক বছর দেখে অভ্যস্ত ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL)| সম্প্রতি কোচ হোসে মোলিনা এবং তাঁর স্কোয়াডকে নিয়ে ওঠা যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর শনিবার, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে একেবারে উবে গেল| মোহনবাগান ৩-০ গোলে মহামেডানকে গুঁড়িয়ে ‘মিনি ডার্বি’র রঙ করে দিল সবুজ-মেরুন|
এই প্রথমবার আইএসএল দেখল গঙ্গাপারের ও রেড রোডের ধারের দুই শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের ডুয়েল| শহরের দুই প্রধানের মুখোমুখি হওয়ার আগে অনেকেই আন্দ্রে চেরনিশভের দলকে এগিয়ে রেখেছিল| কারণ আই-লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আইএসএল অভিষেককারী সাদা-কালো ব্রিগেড রয়েছে দারুণ ফর্মে| অন্যদিকে গত ম্যাচে বেঙ্গালুরুর মাঠে সবুজ-মেরুন তিন গোল হজম করে এসেছে| কিন্তু মাঠে নেমে গল্পটা একদম বদলে গেল, গতবারের লিগ-শিল্ড জয়ীরা দেখিয়ে দিল|
এদিন বিরতির আগেই মোলিনার টিম ৩-০ গোলে এগিয়ে যায়| খেলা শুরুর তিন মিনিটে জেমি ম্যাকলারেন ও চার মিনিটে আপুইয়ার শট মহামেডান গোলকিপার পদম ছেত্রী সেভ না করে দিলে, পাঁচ মিনিটের ভিতরেই গোল চলে আসত|
গোলবন্যার শুরু ম্যাচের মাত্র ৮ মিনিটেই| লিস্টন কোলাসোর কর্নার থেকে গ্রেগ স্টুয়ার্ট মাথা ছুঁইয়ে ইনসুইংগিং বল পাঠিয়ে দেন ম্যাকলারেনকে| অস্ট্রেলিয়ার এ-লিগের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা গোলের মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন| মাথা ছুঁইয়ে বাঁ-দিকের টপ কর্নারে বল জড়িয়ে দেন| আইএসএলে প্রথম গোলের স্বাদ পেলেন তিনি|
সবুজ-মেরুন প্রথম গোল করার পর ব্যবধান বাড়ানোর জন্য মরিয়া আক্রমণে গিয়েছিল| বাকি দুই গোল তারই পরিণাম| ৩১ মিনিটে সাদা-কালো ডিফেন্ডার জোসেফ শুভাশিস বসুকে ফাউল করেন| গ্রেগ স্টুয়ার্টের কর্নার থেকে বাগান অধিনায়ক শুভাশিস গোল করে স্কোরলাইন ২-০ করেন| তবে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের থেকে আরও ভালো পারফরম্যান্স প্রত্যাশিত ছিল এক্ষেত্রে| ৩৬ মিনিটে দলের তিন নম্বর গোলটি করতে দুরন্ত অবদান রাখলেন সেই শুভাশিস| তিনি অ্যাটাকিং থার্ডে স্টুয়ার্টকে দারুণ বল বাড়ান| স্টুয়ার্ট এরপর একক দক্ষতায় মহামেডান ডিফেন্সকে বুঝে নিয়ে দুরন্ত গোল করে, বাগান সমর্থকদের সেলিবেশনে মাতিয়ে দেন|
দ্বিতীয়ার্ধেও মোহনবাগান অল-আউট ঝাঁপিয়েছিল, লিস্টন-স্টুয়ার্ট-মনবীররা যদি তে-কাঠিতে বল রাখতে পারতেন, তাহলে হাফ ডজন গোল হয়ে যেতে পারত| তবে এদিন মহামেডান যে শুরুটা খারাপ করেছিল, তা নয়| কিন্তু মোহনবাগানের সামনে আর খুঁজে পাওয়া গেল না| আগামী ১৯ তারিখ মোহনবাগান ফের নামবে মাঠে| তার আগে আর কোনও ম্যাচ নেই মোলিনাদের| সেদিন ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে হাইভোল্টেজ মেগা ডার্বি| মহারণের আগে মোহনবাগানের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে গেল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না| সেখানে লিগের ‘লাস্ট বয়’ লাল-হলুদ খেলতে নামবে টানা চার ম্যাচ হারের ধাক্কা নিয়ে|