হায়দরাবাদের পুনরাবৃত্তি বাংলায়, যুবতীর অর্ধনগ্ন অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য

হায়দরাবাদের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবার মালদহে। এক যুবতীর অর্ধনগ্ন অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো ইংরেজবাজার থানার কোতোয়ালী গ্রাম পঞ্চায়েতের টিপাজনি এলাকায়। প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশের অনুমান , ধর্ষণ করে খুন করার পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ওই যুবতীর দেহ। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া, ডিএসপি প্রশান্ত দেবনাথ সহ জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা। যদিও মৃতের নাম ও পরিচয় জানতে পারি নি তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা।

পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, অগ্নিদগ্ধ এক যুবতীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃতদেহের কাছ থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে‌। যা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। পাশাপাশি মৃতদেহটি মালদহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বলা যাবে। ধর্ষণ হয়েছে কিনা বা কি অবস্থায় ওই যুবতীর মৃত্যু হয়েছে সম্পূর্ণ নির্ভর করছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ওপর। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

অন্যদিকে এই ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের পর ডিএসসি প্রশান্ত দেবনাথ জানিয়েছেন, ২০ থেকে ২২ বছর বয়সী এক যুবতীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। ওই মৃত যুবতীর গোপনাঙ্গ সহ স্পর্শ কাতর জায়গাগুলিতে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। মৃতদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মালদহের মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মহিলার বয়স ২০ থেকে ২২ বছর। প্রাথমিকভাবে অবিবাহিত বলেই মনে করা হচ্ছে। মৃতদেহের পাশ থেকে এক জোড়া জুতো উদ্ধার হয়েছে। যেটি পুরুষের বলে মনে করা হচ্ছে।

পাশাপাশি কিছু দেশলাই কাঠি উদ্ধার হয়েছে। ঘন আমবাগানের মধ্যেই দেহটি পড়েছিল। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত আগুনে ঝলসানো অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে দেহটি। মৃতদেহটি কেরোসিন তেল ঢেলে পড়ানো হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। মৃত ওই যুবতীর দেহের গোপনাঙ্গ এবং স্পর্শকাতর জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখে মনে করা হচ্ছে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে ওই যুবতীকে। তারপরে প্রমাণ লোপাটের জন্য আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনায় রীতিমতো স্তম্ভিত কোতোয়ালি এলাকার বাসিন্দারা । তাঁরা অনুমান করতে পারছেন না যে এরকম ঘটনা তাদের এলাকায় ঘটতে পারে। এর আগে এই ধরনের ঘটনা এলাকায় কখনোই ঘটে নি বলে দাবি গ্রামবাসীদের। স্থানীয় বাসিন্দারা, জানিয়েছেন সকালে জমিতে কাজ করতে যাওয়ার সময় কয়েকজন মানুষ পোড়া ওই অর্ধনগ্ন যুবতীর দেহ দেখতে পাই। এরপরই গ্রামজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। খবর দেওয়া হয় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।

গৌড় বাংলা হিউম্যান রাইটস আওয়ার্নেস সেন্টারের সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, এই ধরনের ঘটনা কখনোই বরদাস্ত করা যায় না। অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং নিন্দাজনক ঘটনা ।অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। দোষীদের গ্রেপ্তার এবং কঠোর শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামার কথা জানিয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়বাবু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.