নিম্নচাপের বৃষ্টিতে টইটম্বুর নদী। ভাগীরথীর জল উপচে ঢুকছে লোকালয়ে। আবার শুরু হয়েছে ভাঙন। বৃষ্টি আর জলের তোড়ে জোড়া দুর্বিপাকে বিপর্যস্ত নদিয়া বিভিন্ন অঞ্চল। আতঙ্ক ছড়িয়েছে শান্তিপুর, নবদ্বীপ, স্বরূপগঞ্জ এবং কালীগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের মধ্যে। নবদ্বীপ এবং শান্তিপুরে গঙ্গার জলস্তর গত তিন দিনের মধ্যে দু’মিটার পর্যন্ত বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। মাত্র দু’বছর আগে নির্মিত বাঁধ ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে। বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকিয়ে চাষের জমি রক্ষার অনেক চেষ্টা করেছেন স্থানীয়েরা। কিন্তু সে সবও তলিয়ে গিয়েছে। ভাঙন-ভয়ের মধ্যে বাঁধের মান এবং প্রশাসনিক উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নবদ্বীপ ও শান্তিপুরের গঙ্গাপারের বাসিন্দারা।
শান্তিপুরের নৃসিংহপুর, চৌধুরীপাড়া, কালীর ঘাট ইত্যাদি এলাকা নদী ভাঙনের জেরে জেরবার। চাষের জমি ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়াও শুরু হয়েছে যাতায়াতের সমস্যা। শনিবার রাত থেকে নিদয়া, ইদ্রাকপুর সংলগ্ন এলাকায় নদীর জল বোল্ডার দিয়ে বাঁধানো বাঁধ পেরিয়ে উঠে এসেছে। জলের তলায় কংক্রিটের ধাপ-সহ স্নানের ঘাট। এখন নদী থেকে কমবেশি পঞ্চাশ ফুট দূরে রয়েছে ঘন জনবসতি। তাই আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে।
ভাঙনের খবর পেয়ে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন হরিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান বীরেন মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘এর আগেও অত্যন্ত প্রান্তিক ওই এলাকায় গঙ্গাভাঙনে বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আবার সমস্যা শুরু হয়েছে।’’ ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দা রমেন সরকারের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। তিনি বলেন, ‘‘লাগাতার বৃষ্টিতে পারের মাটি নরম হয়ে ভেঙে পড়ে ভাগীরথীর জলে। এ ভাবেই আমাদের বাপ-ঠাকুরদাদের আমলের জমি জলের তলায় চলে যাচ্ছে।’’ তার মধ্যে টানা বৃষ্টিতে বন্ধ কাজ হয়ে গিয়েছে স্থানীয় গ্রামবাসীদের। টান পড়েছে রুজিরুটিতে। তার মধ্যে মাথার উপরে ছাদ হারানোর আশঙ্কায় দিশাহারা তাঁরা।