মাহসা আমিনি ‘হত্যা’র দু’বছর! তাঁর স্মরণেই কি আবার হিজাবে ‘না’ বলছেন ইরানের মেয়েরা?

দু’বছর আগের কথা। মাহসা-‘হত্যা’র প্রতিবাদে হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল ইরান। সে আন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল সারা বিশ্বে। এ বার সেই দিনের দু’বছর পূর্তির আগেই কি আরও এক বার হিজাব-বিধি অমান্য করার পথে হাঁটছেন ইরানের মেয়েরা?

টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া-র একটি প্রতিবেদনে দাবি, সম্প্রতি ইরানের রাস্তায় হিজাব ছাড়া বহু মহিলাকেই অবাধে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। সমাজমাধ্যমের নানা ছবি ও ভিডিয়োতেও মেয়েদের মাথায় আবরণ দৃশ্যমান নয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, দিব্যি চুল কাঁধের উপর ছড়িয়েই ঘুরছেন তাঁরা! যদিও এ পর্যন্ত ইরানের কোনও সরকারি সূত্র এই খবরকে মান্যতা দেয়নি।

মনে করা হচ্ছে, গত মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের কট্টরপন্থী প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির মৃত্যুর পর মাসুদ পেজেশকিয়ান ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই হিজাব-বিধিতে শিথিলতা এসেছে।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর ঠিক মতো হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ মাহসা আমিনি নামে ২২ বছরের এক তরুণীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের নীতিপুলিশ। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পুলিশি হেফাজতে রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। মাহসার উপরে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিজাব-বিরোধী আন্দোলন শুরু হয় ইরানের নানা প্রান্তে। প্রাক্তন ধর্মগুরু আয়াতুল্লা খোমেইনি এবং বর্তমান ধর্মগুরু আলি খামেনেইয়ের ফতোয়া উড়িয়ে ইরানের মেয়েরা ঘোষণা করেন, দেশ জুড়ে হিজাব পরার বাধ্যতামূলক নিয়ম তাঁরা মানবেন না। দেশের নানা প্রান্তে চুল কেটে, আগুন জ্বালিয়ে শুরু হয় প্রতিবাদ। আন্দোলনের ঢেউ ওঠে বিশ্বের নানা প্রান্তে।

এর পরেই অবশ্য কড়া হাতে আন্দোলন দমনে নামে সরকার। ধর্মীয় ফতোয়া অবমাননা করার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড হয় বহু বিক্ষোভকারীর। এ ছাড়া, হিজাব আইন আরও কড়া করার পথে হাঁটে ইরান। ইসলামিক দণ্ডবিধির যে হিজাব আইনে আগে ১০ দিন থেকে দু’মাস পর্যন্ত জেল-সহ ভারতীয় মুদ্রায় ৯৭ থেকে ৯৭৭ টাকা জরিমানা হত, সেই মেয়াদ বৃদ্ধি করে ৫ থেকে ১০ বছর কারাদণ্ডের বিল পাশ করা হয়। সঙ্গে ঘোষণা করা হয়, হিজাব-বিধি না মানলে ভারতীয় মুদ্রায় সর্বোচ্চ ৭ লক্ষ টাকা জরিমানাও হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.