দু’গোলে এগিয়েও ড্র, আইএসএলে প্রথম ম্যাচ জেতা হল না মোহনবাগানের, চিন্তা রক্ষণ নিয়ে

নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে গোল। তাতেই নিশ্চিত তিন পয়েন্ট হাতছাড়া হল মোহনবাগানের। দু’গোলে এগিয়ে গিয়েও ঘরের মাঠে মোহনবাগান ড্র করল মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে। খেলা শেষ হল ২-২ অমীমাংসিত অবস্থায়। দ্বিতীয়ার্ধে দু’গোল হজম করা মোহনবাগানের রক্ষণ নিয়ে চিন্তা থেকেই গেল।

প্রথমার্ধে মুম্বই রক্ষণের ভুলে দু’টি গোল করে মোহনবাগান। দ্বিতীয়ার্ধে উল্টো চিত্র। দু’গোলে এগিয়েও রক্ষণের ভুলে তা ধরে রাখতে পারল না মোহনবাগান। মুম্বইয়ের কাছে গত মরসুমে আইএসএলের কাপ হারার প্রতিশোধও নেওয়া হল না। আরও এক বার যুবভারতীতে অপরাজিত মুম্বই।

প্রথম একাদশে আক্রমণ ভাগেই তিন ফুটবলারকে রেখেছিলেন কোচ হোসে মোলিনা। ফরোয়ার্ডে জেসন কামিংসের সঙ্গে রেখেছিলেন গ্রেগ স্টুয়ার্টকে। একটু পিছনে ছিলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস। রক্ষণে রেখেছিলেন আলবের্তো রদ্রিগেসকে। তবে উল্লেখযোগ্য হল দীপেন্দু বিশ্বাস এবং অভিষেক সূর্যবংশীর মতো ফুটবলারের উপর ভরসা রাখা।

শুরুতেই বুক কেঁপে গিয়েছিল মোহনবাগান সমর্থকদের। চার মিনিটেই মোহনবাগানের জালে বল জড়িয়ে দেয় মুম্বই। লালিয়ানজুয়ালা ছাংতের থেকে পাস পেয়েছিলেন জন তোরাই। তাঁর শট বিপিন সিংহের পায়ে লেগে ঢুকে গেলেও লাইন্সম্যান পতাকা তোলেন। অফসাইডে ছিলেন বিপিন।

ম্যাচের  আগে উল্লাস মোহনবাগান সমর্থকদের।

আট মিনিটেই এগিয়ে যায় মোহনবাগান। রক্ষণের দোষে গোল হজম করে মুম্বই। বাঁ দিক থেকে দৌড়ে এসে বক্সে বল রেখেছিলেন লিস্টন কোলাসো। সেই বল ধরতে পারেননি মুম্বই গোলকিপার ফুর্বা লাচেনপা। তা তিরির গায়ে লেগে ঢুকে যায়। কিছু ক্ষণ পরেই সমতা ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল মুম্বই। বিপিন পাস দিয়েছিলেন ছাংতেকে। সেখান থেকে পাস যায় কারেলিসের কাছে। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকলেও কারেলিস গোলের বাইরে বল মারেন।

ম্যাচ যত গড়াতে থাকে ততই নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকে মোহনবাগান। মুম্বইয়ের খেলোয়াড়ের মধ্যে দিশাহীন মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছিল। কোনও পাসই ঠিকঠাক হচ্ছিল না। খারাপ ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন জয়েশ রানে।

২৯ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে মোহনবাগান। কামিংসের থেকে ডান দিকে বল পান আশিস রাই। নিখুঁত ক্রস করেছিলেন গ্রেগ স্টুয়ার্টের উদ্দেশে। স্টুয়ার্ট হেড করে বল সাজিয়ে দেন আলবের্তোকে। তিনি অনায়াসে গোল করেন। গোল শোধ করার লক্ষ্যে প্রথমার্ধেই জেরেমি মানজ়‌োরো নামিয়ে দিয়েছিলেন মুম্বইয়ের কোচ পিটার ক্রাতকি। তবে কাজের কাজ হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধেও মোহনবাগানের পায়েই বল ঘোরাফেরা করছিল। তবে দুই উইং দিয়ে মুম্বইও আক্রমণ করছিল। বিপিন এবং ছাংতে ব্যস্ত রেখেছিলেন মোহনবাগান রক্ষণকে। চাপ বজায় রেখেই ৭০ মিনিটে একটি গোল শোধ করে তারা। কর্নার এসে পড়েছিল নুফলের কাছে। তিনি এবং তিরি হেড করতে উঠলেও পারেননি। বল মাটিতে পড়ার পরেই চকিতে শট মেরে শুভাশিস বসুকে এড়িয়ে গোল করেন তিরি।

এক গোল শোধ করার পরেই তেড়েফুঁড়ে ওঠে মুম্বই। সমতা ফেরানোর মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে তারা। এর মাঝেই মোলিনা তুলে নেন কামিংস এবং লিস্টনকে। আক্রমণে দু’জন যে টুকু ব্যস্ত রাখছিলেন মুম্বইকে, তা-ও শেষ হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে গোল থায়ের ক্রুমার। বাঁ দিকে বল পেয়ে এগিয়ে যান নুফাল। তিনি নিখুঁত পাস রাখেন ক্রুমার উদ্দেশে। চলতি বলেই নিচু শটে গোল করেন ক্রুমা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.