Junior doctor, Mamata, সুপ্রিম কোর্টে যদি হয় তাহলে এখানে লাইভ স্ট্রিমিং এ অসুবিধা কোথায়? মুখ্যমন্ত্রীর যুক্তিতে পাল্টা প্রশ্ন জুনিয়ার চিকিৎসকদের

বৃহস্পতিবারও জট খুলল না। ৩০-৩২ জন জুনিয়র ডাক্তার নবান্নে পৌছালেও লাইভ স্ট্রিমিং- এ সরকার রাজি না হওয়ায় বৈঠক হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবান্ন থেকে বেরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ওরা বিচার চায় না ওরা চেয়ার চায়। একই সঙ্গে লাইভ স্ট্রিমিং- এ রাজি না হবার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন বিষয়ে বৈঠকে লাইভ স্ট্রিমিং করা যায় না‌। আর এতেই জুনিয়র চিকিৎসকরা পাল্টা প্রশ্ন করেছেন সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে যদি লাইভ স্ট্রিমিং হয় তাহলে এখানে অসুবিধা কোথায়?

সাংবাদিক বৈঠকে জুনিয়র চিকিৎসকরা প্রশ্ন তুলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে যদি লাইভ স্ট্রিমিং হতে পারে তাহলে কেন এখানে একথা উঠছে? তাদের কথায় তারা বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাননি তারা। তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলেন।

জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, “আমাদের প্রতিনিধি দল সরাসরি সম্প্রচারের কথা আমরা আগেই বলেছিল। সরাসরি সম্প্রচারের দাবি ন্যায্য ছিল।”

তারা প্রশ্ন তুলেছেন, সরাসরি সম্প্রচারে রাজ্য সরকারের কিসের ভয়? আমরা ন্যায় বিচারের দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম‌। বিচারের পথে যারা বাধা সৃষ্টি করছে তাদের সরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছি, যাতে তদন্তে প্রভাব না পড়ে।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কথায় “আমরা রাজ্যের সর্বোচ্চ অফিসে এসেছিলাম। আমরা ভাই বোনের মতোই তার কাছে এসেছিলাম। আমাদের নিজেদের স্বার্থ নেই। এটা সাধারণ মানুষের স্বার্থ। তার চেয়ারের দাবিতে আমরা আসিনি। আমাদের বোন ও তার পরিবারের জন্য এসেছিলাম। আবারও যে কোনো জায়গায় আলোচনায় ডাকলে আমরা যেতে প্রস্তুত। এটা ইগোর লড়াই নয়, বিচারের লড়াই এটা। বিচারের স্বার্থে এই লড়াই। ইগো শব্দে তাদের আপত্তি আছে বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।

মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বাইরের কারো নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, “বাইরে কারোর কথায় চালিত হচ্ছি না, মুখ্যমন্ত্রী ভিত্তিহীন কথা বলছেন।”

তারা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা আছে, তাদেরও সদিচ্ছা আছে। সাধারণ মানুষের সদিচ্ছা আছে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের একাংশের ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলতে এসেছিলাম। বিচার পেতে ৩৫ দিন চলে গেল। প্রত্যেক মানুষের মৃত্যু দুঃখ জনক। আমাদের কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতি মনে হয়। আমরা হেরে গেলাম মনে হয়। কিন্তু তারা প্রশ্ন তোলেন, এত মেডিকেল কলেজ, কিন্তু পরিকাঠামো কোথায়?

বিচার নয়, চেয়ারের দাবিতে এসেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর জবাবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বলেন, “আমরা খুব বিনীতভাবে জানাতে চাই আমরা চেয়ারের জন্য কোনো আলোচনা করতে আসিনি। আপনি ভুল ভেবেছেন। আমরা এসেছিলাম ন্যায় বিচারের দাবিতে। যাতে আলোচনা হয়, সেই দাবিতে এসেছিলাম। চেয়ারের জন্য নয়, চেয়ারে ভরসা রেখেই আমরা আলোচনার জন্য এসেছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, আমরা হতাশ।

চিকিৎসকরা প্রশ্ন তুলেছেন, যাদের অপসারণের দাবি তারা তুলেছেন, সেই দাবির কি ন্যায় বিচারের সঙ্গে যোগাযোগ নেই? এই মানুষগুলি যদি পদে থাকেন তাহলে তদন্ত প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। সেখান থেকে তাদের মনে হয়েছে, পাঁচটি দাবি সমান গুরুত্ব পাবে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর স্বদিচ্ছার ভরসা আছে বলেই জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাই তারা অপেক্ষা করবেন। দরকার হলে ৩৫ দিন, ৩৬ দিন, ৩৭ দিন রাস্তায় থাকবেন। তাদের বিশ্বাস আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান বার হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.