সপ্তাহ খানেক আগেই হাত ভেঙেছে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর। আর সেই ভাঙা হাত নিয়েই এ বার আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে কলকাতার রাজপথে নামলেন তিনি। স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার দিনটির স্মরণে বুধবার সিমলা স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় পর্যন্ত ‘বিবেক জাগরণ যাত্রা’র ডাক দিয়েছিল বিদ্বজ্জনদের একাংশ। সেই পদযাত্রায় অংশ নিলেন ‘মহাগুরু’। সেই মিছিলে হাঁটলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার, প্রাক্তন আমলা তথা প্রাক্তন সাংসদ বিক্রম সরকার, চিকিৎসক কুণাল সরকার, শিক্ষক বিমলশঙ্কর নন্দ প্রমূখ। মিছিলে সামিল হলেও, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই হাঁটেননি তিনি। বরং একটি হুডখোলা জিপের সামনের আসনে বসেই কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা গেল তাঁকে।
কর্মসূচির উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শকে স্মরণ করেই এই মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ১৮৯৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার শিকাগো শহরে স্বামী বিবেকানন্দ সারা পৃথিবীর বিবেকের জাগরণ ঘটিয়েছিলেন। অথচ আজ ১৩১ বছর পরে তাঁর নিজের শহর কলকাতাতেই বিবেকের দংশনে নিত্য ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে মানুষ! আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা সমাজের মনুষ্যত্বকে। তাই প্রতিবাদ হিসাবে শিকাগো বক্তৃতার দিনেই এই কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন তাঁরা। অসুস্থ শরীরে মিঠুনের মতো তারকা তাঁদের উদ্যোগে শামিল হওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ দিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
মিছিলের আহ্বায়ক ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার। বিকাল ৪টেয় নাগাদ হেদুয়ায় স্বামীজির পৈতৃক বাসস্থান থেকে মিছিল শুরু হয়। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের মূর্তির পাদদেশে পৌঁছে শেষ হয় তাঁদের কর্মসূচি। প্রসঙ্গত, গত ৯ অগস্ট আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রতিবাদ শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও জেলায় জেলায় পথে নেমেছেন বহু সাধারণ মানুষ। মিছিল, জমায়েত, মানববন্ধনে যেন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে ব্যস্ত কলকাতা। আর বুধবার সেই প্রতিবাদেই শামিল হলেন জোড়াবাগানের ‘গৌরাঙ্গ’।