ইতিহাস থেকে ১৪৩ রান দূরে বাংলাদেশ, শান্তদের চোখ অশান্ত আকাশে! লজ্জা ঢাকতে মরিয়া পাকিস্তান

রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জিতে ইতিহাস তৈরি করেছে বাংলাদেশ। সেই ইতিহাসকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে চাইছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ২২ গজের মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছেন শান মাসুদেরা। মঙ্গলবার দরকার শুধু ১৪৩ রান।

দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ করে ২৬২ রান। ঘরের মাঠে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি পাকিস্তান। ১৭২ রানে মাসুদদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশের জয়ের লক্ষ্য ১৮৫। সোমবার খেলা বন্ধ হওয়ার সময় শান্তদের দ্বিতীয় ইনিংসের রান কোনও উইকেট না হারিয়ে ৪২। দ্বিতীয় টেস্টে জয় থেকে ১৪৩ রান দূরে বাংলাদেশ। হাতে ১০ উইকেট। লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব নয়। পাকিস্তান হার বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করবে নিশ্চিত। তবু পঞ্চম দিনের পিচে পড়ে থাকতে পারলে জয় আসতেই পারে।

দ্বিতীয় টেস্টের আবহ বার বার বদলেছে। কখনও পাকিস্তানের দিকে ম্যাচ ঝুঁকেছে। আবার কখনও বাংলাদেশের দিকে। দু’দলের সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়েছে রাওয়ালপিন্ডির আকাশ। বৃষ্টির জন্য প্রথম দিন এক বলও খেলা হয়নি। সোমবারও শেষ দু’ঘণ্টার খেলা ভাসিয়েছে বৃষ্টি। বাংলাদেশকে আশঙ্কায় রেখেছে আকাশ। সেই আকাশই আবার পাকিস্তানকে আশায় রেখেছে। বলা হয়, ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। পাকিস্তান-বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্টের শেষ দিনে ভরা অনিশ্চয়তা।

এ বারের সফরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম সিরিজ় জয়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। ক্রিকেটারেরাও দাঁড়িয়ে আছেন ইতিহাসের দরজায়। রাওয়ালপিন্ডির মাটিতে টেস্ট সিরিজ়ে পাকিস্তানকে চুনকাম করতে পারলে নতুন গতি পেতে পারে ওপার বাংলার ক্রিকেট। পেতে পারে নতুন দিশা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বলার মতো সাফল্যের খোঁজে থাকা ১৭ কোটি বাংলাদেশির স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে স্নায়ুর চাপ থাকতে পারে ক্রিকেটারদের উপর। নিশ্চিত ভাবে বেশি চাপে থাকবেন বাবর আজ়ম, মহম্মদ রিজওয়ানেরা। ক্রিকেটীয় ঐতিহ্য, ইতিহাস, সাফল্য সব কিছুতেই অনেক এগিয়ে পাকিস্তান। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কাছে সিরিজ় হারতে হলে লজ্জায় পড়তে হবে। পাকিস্তানের চাপ বেশি কারণ, তাদের উভয় সঙ্কট। দ্বিতীয় টেস্ট ড্র হলেও সিরিজ় হারতে হবে তাদের। হারলে তো কথাই নেই। মুখ রক্ষার একমাত্র উপায় জয়।

রাওয়ালপিন্ডির ২২ গজে প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে বাংলাদেশের ৬ উইকেট তুলে নিয়েও লাভ হয়নি। লিটন দাস এবং মেহদি হাসান রিমাজের চওড়া ব্যাটে বদলে গিয়েছিল খেলার রং। প্রথম টেস্ট জয়ের পর বাংলাদেশের দলটা অনেক বদলে গিয়েছে। অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। আগ্রাসী। দেশের পরিস্থিতি হয়তো শান্তদের আরও সংঘবদ্ধ করেছে। বদলে যাওয়া শান্তদের সামলাতে পারছে না নানা কলহে জর্জরিত পাকিস্তান দল। দ্বিতীয় টেস্টেও হারের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা মাসুদেরা হয়তো শাহিন আফ্রিদির মতো স্ট্রাইক বোলারকে না খেলানোর ক্ষতি বুঝতে পারছেন। কিন্তু মেনে নেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। মঙ্গলবার কোণঠাসা এই পাকিস্তানকেই চেপে ধরতে মরিয়া বাংলাদেশ। মাসুদের বোলারেরা কি পারবেন ১০ উইকেট তুলে নিতে। অসম্ভব না হলেও কঠিন। আর এক এক করে ১৪৩ রান করে ফেলতে পারলেই খেলা শেষ।

নতুন ইতিহাস খেলা হবে দু’দেশের ক্রিকেটে। বাংলাদেশের গর্বে লজ্জিত হবে পাকিস্তান! আরও এক বার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.