আরব সাগরের বুকে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’ ক্রমশ ভারতীয় উপকূল থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও ‘আসনা’ পশ্চিম-উত্তর দিকে সরবে। এমনই জানিয়েছে ভারতের মৌসম ভবন। কিন্তু গুজরাতের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনও দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, সৌরাষ্ট্র-কচ্ছ অঞ্চলের জামনগর, পোরবন্দর, দ্বারকা এবং কচ্ছের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।
শুক্রবারই গুজরাত উপকূলে আরব সাগরের উপর গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ থেকেই ঝড়টি ধীরে ধীরে সরতে থাকে ভারতীয় উপকূল থেকে। ঘূর্ণিঝড় সরলেও দুর্যোগ চলছেই। গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টির জেরে ভাসছে গুজরাতের বহু এলাকা। মৌসম ভবন জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪-১১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। শনিবারও গুজরাতের বিভিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। আগামী সোম-মঙ্গল পর্যন্ত এই আশঙ্কা থাকছে গুজরাতে।
ভারী বৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত গুজরাতের জনজীবন। কচ্ছে ভেসে গিয়েছে রাস্তা। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সেই ভাঙা রাস্তা মেরামতির কাজও চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজকোট, দ্বারকা, বরোদা, কচ্ছ এবং জামনগরের অনেক জায়গা। ভারী বর্ষণের কারণে বিধ্বস্ত গুজরাতের বেশ কয়েকটি এলাকায় নদীর জল ঢুকে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। গত রবিবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির জেরে গুজরাতে এখনও পর্যন্ত ৩৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। গুজরাতে বিশ্বামিত্রি-সহ বেশ কয়েকটি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। নদীর জল ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে।
গুজরাতের পাশাপাশি উপকূলীয় কর্নাটকেও চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আসনার প্রভাবে দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আসনার জেরে পাকিস্তানেও শনিবার থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়াও। তবে ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি হারিয়ে ওমানের দিকে সরে যাবে বলেই জানাচ্ছে মৌসম ভবন।