নির্যাতিতার দেহে যে চাদর ঢাকা দেওয়া ছিল, সেটি নীল রঙেরই, সে তথ্যপ্রমাণ আছে বলে জানিয়ে দিল পুলিশ

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হলে নির্যাতিতার দেহ যে চাদরে ঢাকা ছিল, তা নীল রঙেরই। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। এই নিয়ে নির্যাতিতার বাবা-মায়ের দাবি খারিজ করে দিল কলকাতা পুলিশ।

সেমিনার হলে নির্যাতিতার দেহ যখন রাখা ছিল, সে সময়ের একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে (আনন্দবাজার অনলাইন সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি)। সেই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, নির্যাতিতার দেহে যে চাদর ঢাকা দেওয়া রয়েছে, তার রং নীল। নির্যাতিতার বাবা-মা দাবি করেছেন, ৯ অগস্ট দুপুরে তাঁরা যখন সেমিনার হলে মেয়ের দেহ দেখেছিলেন, তখন তা সবুজ চাদরে ঢাকা দেওয়া ছিল। এর পরেই তৈরি হয় জল্পনা। এ বার সেই জল্পনায় ইতি টানলেন ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রেকর্ড রয়েছে। দফায় দফায় সেই রেকর্ড রাখা হয়েছে। তা থেকে স্পষ্ট যে, মৃতদেহে ঢাকা দেওয়া চাদর নীলই ছিল। অন্য কোনও রঙের প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের হাতে যখন এই মামলার তদন্তভার চলে যায়, তখন আদালতের নির্দেশে তাঁদের হাতে কেস ডায়েরি তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ‘ফোটোগ্রাফি, ভিডিয়োগ্রাফি’ জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই নথিতেও ওই নীল রঙেরই উল্লেখ করা হয়েছে বলে দাবি করলেন ইন্দিরা।

একটি সূত্রের দাবি, লাল চাদর গায়ে দিয়ে সেমিনার হলে ঘটনার রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন চিকিৎসক। ভিডিয়োতে নীল চাদরে মোড়া দেহের কাছে সেই লাল চাদরের অস্তিত্বও চোখে পড়েছে। তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এই নিয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছেন ইন্দিরা। সেই চাদর ঘটনাস্থল থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কি না, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে তারও জবাব দিয়েছেন ডিসি (সেন্ট্রাল)। তিনি বলেন, ‘‘অনেক আগেই সেই লাল চাদর বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আগের সাংবাদিক বৈঠকে সে কথা বলাও হয়েছে। ওই চাদর নির্যাতিতার নিজের ছিল। ঘটনাস্থল থেকে বাজেয়াপ্ত করার পর সেটি সিবিআইকে দেওয়া হয়েছে।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘আমরা স্পষ্ট করছি যে, ইনকোয়েস্ট, ফরেন্সিক, সিজার (বাজেয়াপ্ত), তিন প্রক্রিয়ার সময়েই যে চাদর দিয়ে দেহ ঢাকা ছিল, তা নীল। সবুজের উল্লেখ নেই।’’

৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের সেমিনার হলে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.