উপনির্বাচনে ৩-০ ফলে জেতার পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্যের পরিস্থিতি যেন কোনও ভাবেই উত্তপ্ত না হয়। বিজয় মিছিল করতেও নিষেধ করেছিলেন কর্মীদের। কিন্তু তার পরেও একই দিনে রাজ্যের দু’জায়গায় দু’জন বিজেপি কর্মী আক্রান্ত হলেন। দুটি ঘটনাতেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিজেপি।
রবিবার দুপুরে বেলঘড়িয়ার নন্দন নগর এলাকার কামারহাটি পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কর্মী জয় দাসকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, জয়কে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অজিতা ঘোষের স্বামী তাপস দত্ত স্থানীয় একটি তৃণমূল অফিসে ডেকে পাঠান। সেখানে বিজেপি করার অপরাধে তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি জয়কে ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই মারধরে সারা গায়ে কালশিটে পড়ে গিয়েছে জয়ের। মারধরের পর তাঁকে প্রথমে কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর হাতে সেলাই পড়ে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে নিয়ে বেলঘড়িয়া থানায় যান বিজেপি কর্মীরা। কাউন্সিলরের স্বামী তাপস দত্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে থানায়।
অন্যদিকে আজ দুপুর আড়াইটে নাগাদ বীজপুরের ধানকল এলাকায় রাজু দাস নামে এক বিজেপি কর্মী আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। তাঁর বাড়ি হালিশহরের রায়গেট এলাকায়। দুপুরে স্থানীয় কেবল ব্যবসায়ী রাজু তাঁর মেয়েকে বাইকে করে টিউশনিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, তখনই রাস্তায় বেশ কয়েকজন যুবক বাঁশ, লাঠি নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হয়। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে তাদের হাতে আক্রান্ত হয় রাজুর মেয়েও। তার জামাকাপড় ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
কোনওরকমে সেখান থেকে দৌড়ে মাকে খবর দেয় কিশোরী। খবর পেয়ে সেখানে আসে বিজেপি কর্মীরা। ততক্ষণে অভিযুক্ত যুবকরা পালিয়ে গিয়েছে বলে খবর। বিজেপি অভিযোগ করেছে, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আহত অবস্থায় রাজুকে নিয়ে আসা হয় কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে। সেখানেই আপাতত চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। ফলে এলাকায় চাঞ্চল্য রয়েছে বলে খবর।
দুটি ঘটনাতেই তাদের উপর ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। শাসকদলের বক্তব্য, এ সবই বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। নিজেরাই ক্ষমতার লোভে মারামারি করছে। এই ঘটনায় তৃণমূলের কেউ যুক্ত নয় বলেই জানিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।