ঘৃণ্য অপরাধের আগের দিন আরজি করের চিকিত্সক-পড়ুয়াকে হাঁ করে গিলছিল সঞ্জয়! সিসিটিভি ক্যামেরায় সেই ছবি ধরা পড়েছে বলেও সূত্রের খবর। সূত্রের খবর, তাকে গ্রেফতারের পর কলকাতা পুলিস যখন জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছিল, তখনই ধৃত সঞ্জয় স্বীকার করে যে ওই ঘটনার আগের দিন ৮ তারিখ সে চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে নির্যাতিতার উপর ‘নজর’ রাখছিল। তার এই স্বীকারোক্তির স্বপক্ষে প্রমাণও মিলেছে। যা কিনা প্রমাণ করছে যে, অপরাধের আগের দিন সে নির্যাতিতার আশপাশেই ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে ধরাও পড়েছে সেই ছবি! সূত্র মারফত এমনটাই জানা যাচ্ছে। সূত্র বলছে, ৮ অগাস্ট বেলা ১১টার সময় চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে ছিল সঞ্জয়। সেই সময় নির্যাতিতা চিকিত্সক ও ৪ জুনিয়র ডাক্তারও ওই ওয়ার্ডে ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে, সেইসময় সঞ্জয় তাঁদের দিকে কীভাবে হাঁ করে তাকিয়ে ছিল!
প্রসঙ্গত, আগেই জানা গিয়েছিল যে রাত আড়াইটে থেকে ৩টে নাগাদ দোতলা, তিনতলার করিডর ও চেস্ট ডিপার্টমেন্টের কাছে সিসিটিভিতে সঞ্জয়কে দেখা গিয়েছে। সেমিনার হলের সামনের দিকে লিফট থেকে উঠে যে করিডর, সেখানেও ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ধৃত সঞ্জয়কে। ৩টে পর থেকে সিসিটিভি ফুটেজে, প্রায় ৪৫ মিনিট পর অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে সেমিনার হল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। অনুমান, রাত ৩টের পরই ঘটনাটি ঘটেছে। ওদিকে ধৃত সঞ্জয়ের সাইকোমেট্রিক টেস্টেও মিলেছে হাড়হিম তথ্য। ‘অ্যানিমাল ইনস্টিংক্ট’ বা ‘হিংস্র জন্তুর মতো প্রবৃত্তি’! আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়ের সাইকোমেট্রিক টেস্টে এমনই হাড়হিম তথ্য মিলেছে বলে সূত্রের খবর।
ধৃত সঞ্জয়ের দফায় দফায় মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষায় যে রিপোর্ট সামনে এসেছে, তা দেখে চমকে উঠেছেন তদন্তকারী থেকে মনস্তত্ত্ববিদরা। সাইকোমেট্রিক টেস্টের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁরা একটা বিষয়ে নিশ্চিত যে এই ঘটনায় ধৃত সঞ্জয় বিকৃত যৌনতায় আক্রান্ত। চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে অপরাধ বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে হয়, ‘সেক্সুয়ালি পারভারটেড’। সিবিআই সূত্রে খবর, সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় গোটা পর্বেই সে আবেগহীন অবস্থায় ছিল। অনুশোচনার কোনও লক্ষ্মণও তার মধ্যে দেখা যায়নি। অভিযুক্ত যদি একাধিক হয়ে থাকে, তবে বাকিদের মধ্যেও এই ‘প্রবৃত্তি’ রয়েছে বলে মত তদন্তকারীদের।
আরজি করের মৃত চিকিত্সক-পড়ুয়ার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নির্যাতিতার শরীরে ২৫টিরও বেশি গভীর ক্ষতের উল্লেখ রয়েছে। নির্যাতিতার মাথা, মুখ, ঠোঁট, চোখ, ঘাড়, হাত, যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষতের উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। ভয়ংকর শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের প্রমাণ ময়নাতদন্তের রিপোর্টের লাইনে লাইনে।