ইতিমধ্যেই আরজিকর কাণ্ডের তদন্তভার গেছে সিবিআইয়ের হাতে। এবার এই বিষয়টি গড়াল সুপ্রিম কোর্টে। এই বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করতে চলেছে দেশের শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবারই দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এ নিয়ে শুনানি রয়েছে।
স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই মামলায় হস্তক্ষেপ করেছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদি ওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। দুই আইনজীবী চিঠি লিখে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে স্বতঃপ্রণোদিত এই মামলা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছিলেন। সোমবার আদালত বন্ধ থাকায় মঙ্গলবার সকালে প্রথমেই এই মামলার শুনানি হবে।
কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী ডাক্তারি পড়ুয়ার মৃত্যুতে তোলপাড় রাজ্য সহ দেশ। ধর্ষণ করে তাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে লাগাতার আন্দোলন মিছিল চলছে রাজ্যজুড়ে। পুলিশের হাত থেকে ঘটনার তদন্তভার সিবিআই- এর হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এবার এই মামলায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে হতক্ষেপ করতে চলেছে সর্বোচ্চ আদালত। যখন কলকাতা শহর ও রাজ্যজুড়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ চলছে, সেই পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করল শীর্ষ আদালত।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু পুলিশি তদন্তে বারবার ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নানা দিক থেকে। নির্যাতিতার পরিবারের তরফেও সিবিআই তদন্তের দাবি তোলা হয়। সেই মত কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মামলার তদন্তভার সিবিআই- এর হাতে তুলে দেন।
আরজিকর কান্ডের তদন্ত নেমে সিবিআই লাগাতার তৃতীয় দিন ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। সিবিআই সূত্রে খবর, খতিয়ে দেখা হবে সন্দীপ ঘোষের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড। নিহত চিকিৎসকের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে চলবে জিজ্ঞাসাবাদ। সেমিনার হলের পাশের দেওয়াল কেন ভাঙ্গা হয়েছিল সন্দীপের কাছে জানতে চায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থার সূত্রে খবর, দ্রুত সঞ্জয়ের মানসিক স্বাস্থ্য বিচার করতে আনা হয়েছে দুই মনস্তত্ত্ববিদকেও।
সিবিআই- এর হাতে তদন্ত ভার তুলে দেওয়ার সময় আদালত পুলিশের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে। হাইকোর্ট বলেছিল তরুণী চিকিৎসকের অভিভাবক সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে যদি এভাবে তদন্ত চলতে দেওয়া হয় তাহলে সেটা দিশা হারাবে। আজিকর মামলায় প্রথম দিন থেকেই হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্য ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে পুরস্কৃত পদে নিয়োগ করা নিয়ে রাজ্যের সমালোচনা করেছিল হাইকোর্ট। আদালত বলেছিল আরজিকরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। এই অবস্থায় আরজিকরের মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্ট এই ঘটনার তদন্তের গতিপ্রকৃতি হাসপাতাল ও রাজ্যের ভূমিকা খতিয়ে দেখবে। এছাড়াও কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও শুনানি করতে পারে সর্বোচ্চ আদালত।