গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ভর্তি নিয়ে সম্প্রতি মালদহ সফরে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর শুরু হয় অস্থায়ী কর্মী এবং ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন। ফলে চাপে পড়ে শেষপর্যন্ত পদত্যাগ করলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য স্বাগত সেন। এদিকে নতুন করে অস্থায়ী রেজিষ্টার বিপ্লব গিরির পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর।
সূত্রের খবর, ১৯ নভেম্বর মালদহে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে ফাঁকা আসন পড়ে থাকার পরেও ছাত্র-ছাত্রীরা কেন কলেজগুলোতে ভরতি হতে পারছে না তা নিয়ে প্রশ্ন করেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাগত সেনের কাছে। অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া হয়। এক্ষেত্রে তাঁর করার কিছু নেই বলে উল্টে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন স্বাগত সেন। প্রশাসনিক বৈঠকেই স্বাগত সেনকে ভৎর্সনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এবং রাজ্যের শিক্ষা সচীবকে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি। তার দশ দিনের মধ্যে গৌড়বঙ্গ বিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাগত সেনের পদত্যাগ তাৎপর্যপূর্ণ।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন স্বাগত সেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন তেমন কিছু এগোয়নি। ছাত্রী ভরতি থেকে ফল প্রকাশ সব কিছুতেই পিছিয়ে যাচ্ছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।
গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মানা হয়নি। অস্থায়ী কর্মীদের ছয়-সাত বছর ধরে কোনও রকম বেতন বৃদ্ধি করা হয়নি বলেও অভিযোগ উঠে। এই সব একের পর এক ঘটনায় মুখ পুড়ছিল রাজ্য সরকারের।
একাধিক বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী এসে প্রশাসনিক বৈঠকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এদিকে অস্থায়ী কর্মীরাও এরপর থেকে অস্থায়ী রেজিস্টার বিপ্লব গিরির পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। গত ২০ নভেম্বর থেকে অস্থায়ী শিক্ষা কর্মীদের আন্দোলনে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর থেকেই উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার কেউই আসছিলেন না বিশ্ববিদ্যালয়ে। উপাচার্য ২১ নভেম্বর মালদহ ছেড়ে কলকাতায় যায়। তারপর থেকে তিনি আর আসেননি। এরপরই তার পদত্যাগ হয়।যদিও গোটা বিষয় নিয়ে রেজিস্টার বিপ্লব গিরির কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।