সোমবার থেকে রাজ্যের বহু হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক জুনিয়র ডাক্তারদের, ভোগান্তির আশঙ্কা

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে পরিস্থিতি। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। রাজ্যের বহু সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। আপৎকালীন এবং সাধারণ সব বিভাগেই পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে সোমবার থেকে ভোগান্তির মুখে পড়তে হতে পারে রোগী ও তার পরিজনদের।।

সোমবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে একটি জেনারেল বডি (জিবি)-র বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১২টি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা। ওই বৈঠকে মোট ছ’দফা দাবি তোলা হয়েছে। আবাসিক ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তাঁদের এই দাবিগুলি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। যে দাবিগুলি পেশ করা হয়েছে সে গুলি হল—

১. ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।

২. তদন্তে স্বচ্ছতা আনতে হবে।

৩. আরজি করের সমস্ত আধিকারিকদের পদত্যাগ করতে হবে। এর পাশাপাশি, আরজি করের পুলিশ ফাঁড়ির এসিপিকেও পদত্যাগ করতে হবে।

৪. প্রতিবাদরত ছাত্রদের উপর পুলিশি অত্যাচারের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে কলকাতা পুলিশকে।

৫. ওই মহিলা চিকিৎসকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৬. সকল হাসপাতালেরর কর্মক্ষেত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

সোমবারের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আরজি কর, এন‌আর‌এস, কলকাতা মেডিক্যাল, ন্যাশনাল, এস‌এসকেএম, কেপিসি, পিয়ারলেস, রুবি, আর এন টেগোর, শিশুমঙ্গল‌ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়াও সোমবার বিকেল ৪টের সময় কলেজ স্কোয়ার থেকে আরজি কর পর্যন্ত একটি মিছিলেরও ডাক দেওয়া হয়েছে।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতা-সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা রবিবারও কর্মবিরতি পালন করছেন। আরজি কর তো বটেই, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে কর্মবিরতি চলছে। কোথাও কোথাও পরিষেবা খানিক স্বাভাবিক হলেও আন্দোলনের আঁচ রয়েছে রবিবারেও।

শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালেরই জরুরি বিভাগের চার তলায় সেমিনার কক্ষে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের দেহ। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তিনি হাসপাতালের কেউ নন। একটি সূত্রের দাবি, ওই ব্যক্তি পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার। যদিও পুলিশের তরফে এ বিষয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে তিনি যে-ই হোন না কেন, হাসপাতালের ভিতরে পুলিশ ফাঁড়ি থাকার পরও কী ভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল বিভিন্ন মহলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.