রাজ্যের অন্যতম নামজাদা সরকারি হাসপাতাল আরজিকরে তরুণি চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তোলপাড় হয়েছে রাজ্য। ইতিমধ্যে ঘটনায় এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত পেশায় সিভিক পুলিশ। এরপর থেকেই রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বঙ্গ বিজেপি। হাসপাতালের ভেতরে চিকিৎসক, চিকিৎসা কর্মী, রোগী, রোগীর বাড়ি পরিজনদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঘটনায় যথাযথ তদন্ত, দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতেই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেলেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জেপি নাড্ডাকে লেখা চিঠিতে সুকান্ত সিবিআই এবং ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের বিশেষ দল পাঠিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
আরজিকর হাসপাতালে কর্মরত মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। যদিও একাধিক তথ্যপ্রমাণ মেলার পর অনেকেই দাবি করতে শুরু করেছেন, খুন করেও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটতে পারে এ ক্ষেত্রে। এই পুরো বিষয়টি নিয়েই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডাকে চিঠি লিখেছেন সুকান্ত মজুমদার। মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া টিম পাঠিয়ে বাংলার বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন স্তরের মানুষের প্রতিবাদের কথা ও উল্লেখ করেছেন চিঠিতে। একই সঙ্গে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো সহ চিকিৎসক ও নার্সদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। হাসপাতালে ডিউটি করার সময় সব চিকিৎসকদের জন্য বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গঠনের কথাও চিঠিতে বলেছেন সুকান্ত মজুমদার। একই সঙ্গে এই ঘটনা গোটা চিকিৎসা জগতের সঙ্গে জুড়ে থাকা সবার মনকে নাড়িয়ে দিয়েছে ও তাদের মানসিক ভাবে দুর্বল করে দিয়েছে। ফলে কর্মক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সঙ্গে তাদের মানসিক ভাবে দৃঢ়তা দিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
আরজিকরে মহিলা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। কলকাতা পুলিশের এই সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরাট প্রভাব ছিল হাসপাতালের ভেতরে। সে পুলিশের ব্যারাকে থাকত, পুলিশের বাইক ব্যবহার করত। হাসপাতালের ভেতরেও তার যথেষ্ট প্রভাব ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়টি নজরে এনে ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।
ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জানাগেছে, হাসপাতালে অবাধ যাতায়াত ছিল ধৃত সঞ্জয় রায়ের। ঘটনার স্থান থেকে উদ্ধার এয়ারফোনের সূত্র ধরেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিসিটিভিতে দেখা যায় গলায় এয়ারফোন ঝুলিয়ে সেমিনার রুমে ঢুকছিল সঞ্জয়। প্রায় তিরিশ মিনিট পর হল থেকে ইয়ারফোন ছাড়াই বেরোয় সঞ্জয়। সেই সময় অনলাইনে অর্ডার দিয়ে আনা খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিতে যান ওই তরুণী চিকিৎসক। সিসিটিভিতে ওই সময়ে চারজনের গতিবিধি ধরা পড়ে। সবাইকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সঞ্জয়ের কথায় অসঙ্গতি মেলে।