তিন তিনবার নোটিস পাঠিয়েও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। তাতেও মেলেনি খোঁজ। অবশেষে রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডুর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করল ইডি।
ইডি-র তরফে জারি করা এই নোটিসে বলা হয়েছে, দেশের যে কোনও বিমানবন্দরে গেলেই বাজেয়াপ্ত করা হবে শুভ্রা কুণ্ডুর পাসপোর্ট। এই ব্যাপারে ব্যুরো অফ ইমিগ্রেশনকে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের জানানো হয়েছে, দেশের সব বিমানবন্দরে এই ব্যাপারে যেন নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও যেসব জায়গায় শুভ্রা কুণ্ডুর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে সেসব জায়গায় হানা দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
এর আগে ২১ নভেম্বর ইডি আধিকারিকদের একটি দল গিয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার সাউথ সিটি আবাসনে। সেখানেই থাকেন গৌতম কুণ্ডুর স্ত্রী শুভ্রা কুণ্ডু। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েও শুভ্রার দেখা পাননি ইডি আধিকারিকরা। তাঁর বাড়িতে থাকা পরিচারিকা জানান, শুভ্রাদেবী সপ্তাহখানেক আগে শহরের বাইরে গিয়েছেন। তবে কোথায় গিয়েছেন গৌতম-জায়া তা বলতে পারেননি তিনি।
গত জুন মাসে ইডি আধিকারিকরা বারাসত থেকে বেহালা পর্যন্ত রোজভ্যালির গয়নার বিপণির ১৬টি শোরুমে হানা দিয়েছিল। ইডি সূত্রে খবর, গয়নার বিপণি সংক্রান্ত যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে তাতে অন্তত দেড়শ কোটি টাকার বেশি গরমিল রয়েছে। আর এই গয়না বিপণি দেখভাল করতেন শুভ্রা। তাই তাঁকে ডেকে জেরা করতে চাইছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। শুধু গয়নার বিপণি নয়, বাগুইআটিতে রোজভ্যালির যে টেলিভিশন চ্যানেলের অফিস ছিল, সেখানেও শুভ্রা ছিলেন অন্যতম মাথা। চ্যানেলের প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট দেখতেন তিনি। সে ব্যাপারেও তার থেকে তথ্য জানতে চায় ইডি। মন্দারমণির রোজভ্যালি রিসর্টও ছিল শুভ্রার নামে।
কয়েক মাস আগে অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত থেকে শুরু করে অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সেই সময়েই ডাকা হয়েছিল শুভ্রা কুণ্ডুকে। দু’বার নোটিস পাঠালেও হাজিরা দেননি শুভ্রা। ২০১৭ সালে শুভ্রার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগ ওঠে এক ইডি অফিসারের বিরুদ্ধে। মনোজ কুমার নামের ওই আধিকারিককে দেখা যায় শুভ্রার সঙ্গে দিল্লির একটি হোটেলে ঢোকেন। তখন কলকাতার পুলিশ কমিশনার ছিলেন রাজীব কুমার। সেই সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে তোড়জোড় শুরু করে লালবাজারে। তড়িঘড়ি মনোজ কুমারকে সরিয়ে দিয়েছিল ইডি। ২০১৪ সালে একবার শুভ্রাকে ডেকে পাঠিয়ে জেরা করেছিল ইডি। সেবার বোরখা পরে সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন তিনি।