বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারকে শুরুতেই আক্রমণ করলেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। জানালেন, এই সরকার অসাংবিধানিক। কারণ এই সরকারের কাছে বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন নেই। কেউ এই সরকারকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেননি। বাংলাদেশে অবিলম্বে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা চেয়েছেন জয়।
আমেরিকা থেকে জয়ের সাক্ষাৎকারের একটি অংশ প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। সেখানেই জয় বলেন, ‘‘আমরা সকলে চাই বাংলাদেশে দ্রুত গণতন্ত্র ফিরে আসুক। যে অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক। সামান্য কয়েক জনের মাধ্যমে নির্বাচিত কোনও সরকারের কথা উল্লেখ নেই সংবিধানে। বাংলাদেশে ১৭ কোটি মানুষ রয়েছেন। সেখানে ২০ থেকে ৩০ হাজার আন্দোলনকারী তো সংখ্যালঘু। তাঁরা সরকার ঠিক করতে পারেন না। এই সরকারের জন্য কেউ ভোট দেননি।’’
মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করে হাসিনা-পুত্র আরও বলেন, ‘‘এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে এক সপ্তাহও হয়নি। তারা আদৌ বাংলাদেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফেরাতে পারবে কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। ক্ষমতায় আসা এক জিনিস, আর সরকার চালানো আর এক জিনিস। এই সরকারের কথা কে শুনবে? আমাদের দলের ১০ কোটি সমর্থক রয়েছেন বাংলাদেশে। তাঁরা তো এই সরকারকে সমর্থন করেননি। তাঁদের সমর্থন ছাড়া সরকার চলতে পারে না। কী ভাবে কী হয়, আমরা দেখব।’’
ইউনূস গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বে এসেছেন। নতুন সরকারের ভুল ধরিয়ে দিয়ে জয় বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে এই সরকার ভুল করতে শুরু করেছে। তারা জানিয়েছে, নির্বাচন তাদের অগ্রাধিকার নয়। অগ্রাধিকার হল আগের সরকারের ভুলের বিচার। কিন্তু তাঁদের এই দেশ সংস্কারের অধিকার তো কেউ দেননি! বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন তাঁদের কাছে নেই। এ ভাবে দেশ চলতে পারে না।’’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে এসেছেন হাসিনা। আপাতত তিনি দিল্লিতেই রয়েছেন। হাসিনা দেশত্যাগের পর আমেরিকা থেকে জয় জানিয়েছিলেন, তাঁর মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। ফিরবেন না বাংলাদেশেও। কারণ তাঁর মা অত্যন্ত হতাশ। কিন্তু তার পরে আর এক সাক্ষাৎকারে জয় দাবি করেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলেই হাসিনা আবার দেশে ফিরবেন। তিনি নিজেও বাংলাদেশের সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানান।
বাংলাদেশে সরকার বিরোধী আন্দোলনের চাপে পড়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন হাসিনা। সরকার পড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, সেনাপ্রধান এবং ছাত্রনেতাদের বৈঠকে স্থির হয়, নোবেলজয়ী ইউনূসকে প্রধান করে আপাতত অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হবে। গত বৃহস্পতিবার সেই সরকার শপথ নিয়েছে। ইউনূসের সরকারে ১৬ জন উপদেষ্টাও রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ইতিমধ্যে মন্ত্রক বণ্টন করা হয়ে গিয়েছে।