ভারী বৃষ্টিতে নদী উপচে গ্রামের পর গ্রাম ভেসে গিয়েছে। জলের তলায় চলে গিয়েছে ঘরদোর। এই পরিস্থিতিতেও ‘অ্যাডভেঞ্চারে’ লাগাম নেই। নদীর পারে দাঁড়িয়ে চলছে সেলফি-রিলস্ বানানো! এতে বিপদের সঙ্কেত দেখছে প্রশাসন। প্লাবন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে আরও সতর্ক হওয়ার আবেদন জানালেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার। তাঁর আর্জি, ‘‘নদীর পারে দাঁড়িয়ে ফটোশুট, রিলস্ বানাতে যাবেন না। এই পরিস্থিতিতে কোনও দুঃসাহসিক কাজ করবেন না আপনারা।’’
বৃষ্টি কমলেও শনিবার জলের তলাতেই রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা। তার সঙ্গে চিন্তা বেড়েছে মাইথন, পাঞ্চেত ও দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া শুরু হওয়ায়। প্রশাসনের আশঙ্কা, এতে আরও বহু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। হাওড়াতেও একই পরিস্থিতি। ভিডিসি জল ছাড়ায় আমতার জয়পুরে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে মুণ্ডেশ্বরী নদী। জলের তোড়ে ভেঙেছে চারটি বাঁশের সেতু। রবিবার প্রশাসনিক আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এলাকা ঘুরে মানুষকে তাঁরা আশ্বাস দিয়ে জানান, সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রশাসনও সতর্ক। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ডিভিসি আরও জল ছাড়ছে। ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা সময় লাগবে সেই জল জেলার নদীগুলিতে আসতে। এখনও পর্যন্ত দামোদর-অজয়ের জল বিপদসীমার নীচে বইলেও কোনও খামতি রাখতে চাইছে না প্রশাসন। নদী তীরবর্তী ও চর এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। আপাতত ফেরিঘাট বন্ধ করা না হলেও ফেরি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে। রবিবার জেলা প্রশাসনের কর্তা ও কর্মীদের সকলের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে জেলাশাসক আইয়ার জানান, জেলায় ২২০টি বাড়ি পুরোপুরি ও ১৩৮৫টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও সব হিসেব না হলেও প্লাবনে ৫৫৭০ হেক্টর চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত। দুর্গত মানুষের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এখনও পর্যন্ত ২৪টি কিচেন খোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে শুকনো খাবারও দেওয়া হচ্ছে। ত্রিপল বিতরণ চলছে।