আগামী ২৯ ও ৩০ নভেম্বর দুই দিন ব্যাপী সূচিত হতে চলেছে মেঙ্গালুরু লিট ফেস্ট বা মেঙ্গালুরু সাহিত্য সম্মেলন: জানুন এই বিষয়ে কিছু তথ্য

ন চোর হার্যম্ ন চ রাজ হার্যম,
ন ভ্রাতু ভাজ্যম্ ন চ ভারকারী
ব্যায়ে কৃতে বর্ধতে এব নিত্যম্
বিদ্যাধনং সর্বধনং প্রধানম্।।

হ্যাঁ বিদ্যাই সেই রত্ন , সেই অপরিসীম সম্পদ যার ক্ষয় হয় না। যা দানের ফলে ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়। সেই বিদ্যার চর্চা যাঁরা করেন তাঁদের নিয়েই বিদ্যার উৎসব, ভারতের সব থেকে বৃহৎ সাহিত্য সম্মেলনের প্রহর গোনা সূচিত হতে চলেছে। এই সেই বিখ্যাত সাহিত্যিক সম্মেলনের দ্বিতীয় বর্ষ যেখানে গত বছর চাঁদের হাট বসেছিল এবং এ বছরও বসবে। আর মাত্র চব্বিশটি ঘণ্টা অতিক্রান্ত হলে আগামী ২৯ ও ৩০ নভেম্বর দুই দিন ব্যাপী সূচিত হতে চলেছে মেঙ্গালুরু লিট ফেস্ট বা মেঙ্গালুরু সাহিত্য সম্মেলন।

বহু প্রত্যাশিত এই সাহিত্যিক সম্মেলনে সাহিত্যিক, চিন্তাবিদ, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, ধর্মীয় গুরু প্রমুখ প্রবীণ ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। এই বিদ্যার উৎসবের প্রতিপাদ্য বিষয় হ’ল ‘ভারতের ভাবনা – আজ ও আগামীকাল’।

আগামী ২৯ নভেম্বর মেঙ্গালুরু সাহিত্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত এই বিদ্যার উৎসবের উদ্বোধন করবেন জ্ঞানপীঠ পুরষ্কার প্রাপ্ত শ্রী চন্দ্রশেখর কম্বারা। উক্ত উৎসবের নিমিত্ত আয়োজকরা ২৫ নভেম্বর নগরে একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন এবং উৎসবের বিবরণ সরবরাহ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন নিত্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এন. বিনায়া হেগড়ে। সম্মানিত প্রধান অতিথি রূপে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যসভার সাংসদ শ্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। আরোহী রিসার্চ ফাউন্ডেশনের পরিচালক শ্রী মাতিঘট্ট চৈত্র এই দুই দিনের উৎসব এবং উৎসব সংক্রান্ত তথ্য ও লক্ষ্য সম্পূর্ণ করার জন্য উপস্থিত থাকবেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে পম্পা পুরষ্কার প্রাপ্ত ইতিহাসবিদ ও গবেষক ড. এম চিদানন্দ মূর্তি লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হবেন।

উদার চরিতানাম তু বসুধৈব কুটুম্বকম।

এই মন্ত্রটিই ভারত তথা হিন্দু জাতির সংজ্ঞা প্রদান করে। সমগ্র বিশ্বের আত্মাকে নিজের মধ্যে সমাহিত করা এটাই ভারতের উদারতা। মেঙ্গালুরুর মত একটি নানা সংস্কৃতির মিশ্রণের ফলে গঠিত নগরে এই মন্ত্র এই সংজ্ঞা একেবারেই প্রযোজ্য। এই চিন্তাভাবনার থেকেই মেঙ্গালুরু লিট ফেস্ট বা মেঙ্গালুরু বিদ্যা সাহিত্য উৎসবের ভাবনাটি এসেছিল।

উক্ত উৎসবে ভাবাবেগী ও মনোমুগ্ধকর বৌদ্ধিক আলোচনা করে ভারতবর্ষের সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরাই মূল উদ্দেশ্য। উৎসবে ৬০ জনের অধিক বক্তা ইংরাজী এবং কন্নড় ভাষায় বিভিন্ন বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবেন। বিষয়গুলি ইতিহাস, বর্তমান বিষয়, গবেষণা, সাহিত্য, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিকতা, ধর্ম ইত্যাদি।

গত বছর ৩ ও ৪ নভেম্বর ২০১৮ প্রথম বারের জন্য উক্ত উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখন প্রায় ৫০ জন বক্তা, লেখক, শিক্ষাবিদ প্রমুখরা উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন।
২০১৮ সালে উক্ত উৎসবে আজীবন কৃতিত্বের পুরষ্কার কন্নড় সাহিত্যের বিখ্যাত সাহিত্যিক শ্রীলঙ্কার এস এল ভিরাপ্পাকে দেওয়া হয়েছিল।

উক্ত উৎসবে বহু নামী বক্তা, লেখক এবং গবেষকরা থাকবেন সে কথা পূর্বেই উল্লিখিত হয়েছে। এঁরা হলেন, কোএনর‌্যাড এলস্ট, ডা. কেকে মুহাম্মদ, অরবিন্দন নীলাকান্তন, ডা. ওয়াইল আওয়াদ, মারিয়া রিথ, শ্রাদ্দালু রানাডে, সন্দীপ বালাকৃষ্ণ, হেনরিটা লুসি, সুনীল আম্বেকার, রবি কুমার আইয়ার, রাজারাম হেগড়ে, দিবাকর হেগড়ে, বাসুদেন্দ্র, রাধাকৃষ্ণ কালচর, ডা. অজকাকলা গিরিশ ভাট, এন এইচ রবীন্দ্রনাথ, নন্দন প্রভু প্রমুখ। এছাড়াও রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখর, সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, লোকসভার সাংসদ তেজস্বী সূর্য, অভিনেতা মালবিকা অবিনাশ, এএনআইয়ের মুখ্য সম্পাদক স্মিতা প্রকাশ, গোয়া ক্রনিকলের সম্পাদক স্যাবিও রড্রিগেজ, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ, অভিনেতা এবং নাট্যকার প্রকাশ বেলাওয়াদী, অভিনেতা ও পরিচালক টিএস নাগভরণ, সাংবাদিক শিব অরুর, এবং আরও অনেকে বক্তারা থাকবেন।

এছাড়াও, বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য বৈক্যদী জনার্দন আচারের গল্প বলা, বিশ্বনাথ সুবর্ণার ছবি প্রদর্শনীও থাকবে। আয়োজকরা ষাট থেকে পঁয়ষট্টি জন খ্যাতিমান ব্যক্তিকে তাঁদের অধিকারের জন্য প্যানেলিস্ট, বক্তা এবং রিসোর্স পার্সন হওয়ার জন্য একত্রিত করেছেন, যেখানে “জেএনইউ : বাঁদিকে না ডানদিকে?”, “সাংবাদিকতার ঝুঁকি”, “ইসলাম ও ভারত” ইত্যাদির ন্যায় সমসাময়িক বিষয়গুলিও আলোচিত হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলভার এডুকেশন ফাউন্ডেশনের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে। এছাড়াও উৎসবে নিখিল সিংয়ের চলচ্চিত্র ‘ব্লাড বুদ্ধাস’ও প্রদর্শিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.