Malbazar: বাঘের মুখ থেকে প্রতিবেশীকে বাঁচাতে ছুটে এসেছিলেন! মারা গেলেন সেই যুবক…

চিতাবাঘের হানায় আহত সাতজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হল। আজ, বৃহস্পতিবার মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন প্রদীপ ওঁরাও (২৬)। আহতদের মধ্যে রয়েছেন এক বৃদ্ধ এবং এক শিশুও। চিতাবাঘের আক্রমণের ঘটনাটি ঘটেছিল মঙ্গলবার দুপুরে মালবাজার মহাকুমার কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের নিপুচাপুর চা-বাগান এলাকায়। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল গোটা চা-বাগানে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন মালবাজার ওয়াইল্ড লাইফের আধিকারিক-সহ বনকর্মীরা। আহতদের উদ্ধার করে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। আজ সেখানেই ওই যুবকের মৃত্যু হল। 

মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ নিপুচাপুর চা-বাগান সংলগ্ন শ্রমিক বস্তির এক শিশু আয়ান রায় (৪) বাড়ির পাশে বাগানের মধ্যেই খেলাধুলো করছিল। সেই সময় চা-বাগান থেকে একটি চিতাবাঘ শিশুটিকে আক্রমণ করে। এই দৃশ্য দেখে শিশুর দাদু গৌরাঙ্গ রায় ছুটে যান। রীতিমতো বাঘের সঙ্গে লড়াই করেন তিনি। এমন অবস্থায় চিতাবাঘের হাত থেকে নিজের ছেলে এবং বাবাকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুকেশ রায়। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন প্রতিবেশী তিন যুবক– মার্কোস ওঁরাও, প্রদীপ ওঁরাও, মাংরি ওঁরাও। তাঁরাও এসে চিতাবাঘের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। চিতাবাঘ সকলকেই আহত করে আবার চা-বাগানে পালিয়ে গিয়েছিল। মারা গেলেন এই প্রদীপ ওঁরাও।

সেদিন আশেপাশের মানুষজনও ছুটে এসেছিলেন। তাঁরাই আহতদের উদ্ধার করে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন। সকলেরই চিকিৎসা চলছে এই হাসপাতালে। শিশুটির দাদু গৌরাঙ্গ রায়ের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে ও এই প্রদীপকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। 

সেখানে গৌরাঙ্গ রায়কে ভর্তি করে নেওয়া হলেও প্রদীপকে ওষুধপত্র দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার প্রদীপ ওঁরাও বাড়িতে আসার পর তাঁর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। বুধবার সকালেই প্রদীপকে তাঁর বাড়ির লোকজন ফের মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। বুধবারই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। কিন্তু আজ,, বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ করেই প্রদীপের মৃত্যু হয়। যা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁর পরিবারের লোকজন। 

এদিকে খবর পেয়েই মালবাজার হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন মালবাজার বন আধিকারিকেরা। আহতদের যাতে ঠিকঠাক চিকিৎসা হয় সে ব্যবস্থা করেন তাঁরা। দুর্ঘটনাস্থল নিপুচাপুর চা-বাগানে বনকর্মীরা টহলদারিও শুরু করেন সঙ্গে সঙ্গে। তাঁরা খোঁজ চালাচ্ছেন চিতা বাঘটির। জানা গিয়েছে, অবিলম্বে এই চা-বাগানে খাঁচা পেতে চিতাবাঘটিকে খাঁচাবন্দি করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.