বিরল রোগে আক্রান্তদের জন্য এককালীন ১৫ লক্ষ টাকা দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দারিদ্রসীমার নীচে থাকা রোগীরাই পাবেন এই বিশেষ সুবিধা।
দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী রোগী এবং মারণব্যাধিতে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রাষ্ট্রীয় আরোগ্য নিধি চালু আছে সারা দেশেই। ১৯৯৭ সাল থেকে চালু রয়েছে এই প্রকল্প। এই কর্মসূচিতে দুঃস্থ রোগীদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার জন্য এককালীন অনুদানের ব্যবস্থা আছে। যে কোনও স্পেশালিটি হাসপাতালে এই ধরণের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এই প্রকল্পেরই পুনর্মূল্যায়ণ করে কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, বিরল রোগের চিকিৎসায় এককালীন ১৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা পাবেন দারিদ্রসীমার নীচে থাকার মানুষরা। ফলে উপকৃত হবেন দেশের কয়েক কোটি মানুষ।
সরকারি সূত্র বলছে, বিশ্বজুড়ে আট হাজারের বেশি বিরল ও মারণ ব্যধি রয়েছে যার মধ্যে ৪৫০ রকম রোগের প্রকোপে মৃত্যু হয় এ দেশে হাজার হাজার মানুষের। যার মধ্যে রয়েছে হিমোফিলিয়া, থ্যালাসেমিয়া, সিকল-সেল অ্যানিমিয়া, ক্যানসার, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি (এসএমএ)-র মতো রোগ। রাষ্ট্রীয় আরোগ্য নিধির আওতায় এই প্রকল্পে এইসব মারণব্য়ধিতে আক্রান্তদের বিনামূল্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। গৃহহীন, সহায়-সম্বলহীন, ভিক্ষাজীবী, কাগজকুড়ানি, আইনগত ভাবে ঘোষিত চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক পরিবারগুলি-সহ দারিদ্র্যসীমার নীচে থাকার পরিবারগুলি স্বাভাবিক ভাবেই এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন।
২০১৭ সালে বিরল রোগের চিকিৎসায় সরকারি তহবিল গড়ার বিষয়ে জাতীয় নীতি তৈরি হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক তো বটেই, স্থির হয়েছিল বিভিন্ন রাজ্যেও এই তহবিল থাকবে। প্রাথমিক ভাবে ১০০ কোটি টাকার তহবিলও গঠিত হয়। স্থির হয়েছিল কেন্দ্র-রাজ্য ৬০ ও ৪০ শতাংশ টাকা ভাগাভাগিতে চলবে এই প্রকল্প। স্থির হয়েছিল, প্রতি রাজ্য ‘টেকনিক্যাল কমিটি’ গড়লে তার মাধ্যমে টাকার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করতে পারবেন বিরল রোগে আক্রান্ত বা তাঁদের পরিবারের লোকেরা। তবে সেই কমিটি এখনও পর্যন্ত ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক-সহ মতো কয়েকটি রাজ্যে সীমিত আছে। নতুন প্রকল্প কার্যকরী করার জন্য ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি তৈরি হয়েছে। নতুন কর্মসূচি কার্যকর করা জন্য বিভিন্ন বিষয়ে খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।
গত বছরই চালু হয়েছে মোদী সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প’। এই প্রকল্পে পরিবারের সব সদস্য মিলে বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা পাবেন। এর জন্য কোনও প্রিমিয়াম দিতে হবে না কোনও পরিবারকে। সরকারি ও নির্ধারিত বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে নথিপত্র ছাড়াই ‘ক্যাশলেস’ সুবিধা পাবেন প্রকল্পের আওতাভুক্তরা। নথিভুক্তিরও প্রয়োজন নেই। ২০১১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে স্বাভাবিক ভাবেই সুবিধা মিলবে। প্রমাণপত্র হিসাবে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড বা রেশন কার্ড থাকলেই হবে।