মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের শঠে শাঠ্যং শুধু তীব্র হচ্ছে না, বরং তা এমন তিক্ততায় পৌঁছে যাচ্ছে যা এককথায় নজিরবিহীন। অন্তত বাংলায় স্বাধীনোত্তর সময়ে রাজভবন ও সচিবালয়ের সংঘাত এত নীচে নামেনি।
মঙ্গলবার ৭০তম সংবিধান দিবসের উদযাপন উৎসব হয়েছিল বিধানসভায়। সেই উৎসবে রাজ্যপালকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু দেখা যায়, রাজ্যপাল সেখানে পৌঁছনোর পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও সৌজন্য বিনিময় করেননি।
দু’জনের কোনও কথাও হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীও আড়ো আড়ো ছাড়ো ছাড়োই ছিলেন। শুধু তা নয়, বিধানসভায় বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী হিন্দি গানের এক কলিও কটাক্ষের সঙ্গে বলেন। অনেকে মনে করেন, সেটা রাজ্যপালের উদ্দেশেই বলতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার এ ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন রাজ্যপাল। তিনি ধারাবাহিক টুইট করে বলেন, রাজ্যের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ হল রাজ্যপালের পদ। কিন্তু সেই মর্যাদা তাঁকে দেওয়া হয়নি। গতকালই রাজ্যপাল অভিযোগ করেছিলেন, সাংবিধানিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে তাঁর আগে অন্য বক্তাদের বলার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। এদিন তিনি অভিযোগ করেন, তিনি বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরের মূর্তিতে মালা দিতে যাওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে যাননি। তাঁর কথায়, গোটা ঘটনায় আমি হতভম্ভ! এ কথা বলেই, একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের ছবি টুইট করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, সংবাদপত্রেই প্রকাশিত হয়ে দেখেছি যে মুখ্যমন্ত্রী আমার সম্পর্কে বলেছেন, ‘তু চিজ বড়ি হ্যায় মস্ত মস্ত!’ কিন্তু আমি এ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করব না। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রীর পদের যে গরিমা রয়েছে তা মাথায় রেখে কোনও মন্তব্য করার থেকে সংযত থাকব।
রাজ্যপালের এই টুইট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে তৃণমূল নেতারা বলেন, রাজ্যপাল পুরোদস্তুর রাজনীতি করছেন। তিনি পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া চালিয়ে যেতে চাইছেন। বাংলার মানুষও ওঁর প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝে গিয়েছে। তৃণমূলও দেখছে কতদূর যেতে পারেন তিনি।