কংগ্রেস সভাপতি সনিয়া গান্ধী, তাঁর দুই ছেলেমেয়ে রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা বঢরার নিরাপত্তা খারিজ করা হয়নি, শুধুমাত্র জেড প্লাসে বদল করা হয়েছে। এসপিজি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল নিয়ে একটি বিতর্কের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপির কোনও ধরনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের অভিপ্রায় নেই বরং আগে কংগ্রেস এ কাজ করেছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ দিন তিনি বলেন, “এমন ভাবে প্রচার করা হচ্ছে যেন গান্ধী পরিবারের উপর থেকে নিরাপত্তা প্রত্যাহার করার জন্যই এসপিজি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল আনা হয়েছে। গান্ধী পরিবারের নিরাপত্তা বদলে জেড প্লাস করা হয়েছে সঙ্গে দেশের সব প্রান্তে তাঁদের জন্য থাকছে অ্যাডভান্সড লিয়াঁজ ও অ্যাম্বুলেন্স।”
এ দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, যখন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখর, আইকে গুজরাল ও মনমোহন সিংয়ের এসপিজি নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল তখন এ নিয়ে কেউ একটাও কথা বলেননি।
গান্ধী পরিবারের উপর থেকে এসপিজি নিরাপত্তা তুলে নিয়ে তাঁদের সিআরপিএফ দিয়ে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার কয়েক দিন পরেই সংসদে এসপিজি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল আনা হয়েছে।
দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপ বা এসপিজির হাতে ছিল গান্ধী পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্ব। কিন্তু কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার ৮ নভেম্বর থেকে সেই নিরাপত্তা তুলে নিয়েছে। বর্তমানে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ১০০ সিআরপিএফ। পরে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর জন্য ১০ বছরের পুরনো একটি টাটা সাফারি বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। এই নিয়ে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মহল।
এই বিষয় নিয়ে আগেও বহুবার প্রতিবাদ করেছে কংগ্রেস। মঙ্গলবার ফের এই ইস্যুতে সংসদের নিম্নকক্ষে প্রতিবাদে মুখর হন কংগ্রেস সাংসদরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাংসদরাও। তখন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, “সনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সুরক্ষার ব্যাপারটা বাকি সবার থেকে অনেকটাই আলাদা। বাজপেয়ীজিও গান্ধী পরিবারের জন্য এসপিজি নিরাপত্তা বহাল রেখেছিলেন। ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে দু’বার এনডিএ সরকার ক্ষমতায় এলেও কখনওই গান্ধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা সরানো হয়নি।” এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে উত্তরের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।
এদিন কংগ্রেসের প্রশ্নের জবাব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। এর পরে ১৯৯১ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীও জঙ্গি গোষ্ঠী এলটিটিই-র বোমা বিস্ফোরণে নিহত হন। তার পর থেকেই গান্ধী পরিবারকে কড়া নিরাপত্তা দেওয়া হয়। বাড়তি নিরাপত্তা পান সনিয়া ও তাঁর ছেলেমেয়েরাও।