বাংলাতেও আছে ‘আরাকু ভ্যালি’! রানিগঞ্জ থেকে অল্প দূরেই যাওয়া যায় ছুটি কাটাতে

বাংলার পশ্চিমে অবস্থিত বাঁকুড়া জেলার বুকে লুকিয়ে আছে এক অপূর্ব সৌন্দর্যের পাহাড়ি অঞ্চল, যার নাম বিহারীনাথ পাহাড়। সমুদ্রতল থেকে ৪৫১ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই পাহাড়টি বাঁকুড়া জেলার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ, এটি পূর্বঘাট পর্বতমালার অংশ। ঘন সবুজ বনানী, মনোরম পরিবেশ এবং মনোমুগ্ধকর দৃশ্যে ভরা এই স্থানটি পর্যটকদের কাছে একটি জনপ্রিয় গন্তব্য।

যাত্রা:

কলকাতা থেকে বিহারীনাথ পাহাড় যেতে ট্রেন, বাস এবং গাড়ি-সহ বিভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা উপলব্ধ। ট্রেনে করে যেতে হলে, প্রথমে হাওড়া থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত যেতে হবে, তার পর শিয়ালদহ থেকে বাঁকুড়া লোকাল ট্রেনে যেতে হবে। বাসে করে যেতে হলে, কলকাতা থেকে সরাসরি বাঁকুড়াগামী বাস পাওয়া যায়। গাড়িতে করে যেতে হলে, কলকাতা থেকে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক হয়ে সরাসরি বিহারীনাথ পাহাড়ে পৌঁছনো যায়।

বিহারীনাথ পাহাড়ের অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

থাকার ব্যবস্থা:

বিহারীনাথ পাহাড়ে পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। হোটেল এখানে মধ্যবিত্তদের আয়ত্তের মধ্যেই, সঙ্গে রয়েছে আধুনিক রিসোর্ট। এ ছাড়াও, পর্যটেকরা চাইলে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বিভিন্ন হোমস্টেতেও থাকতে পারেন। এই সব হোটেলে বিভিন্ন ধরনের বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। তাই খাওয়াদাওয়া নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

দর্শনীয় স্থান:

ট্রেকিং: বিহারীনাথ পাহাড়ে ট্রেক করার জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান। এখানে অনেক পর্যটকই ট্রেক করতে পছন্দ করেন। ট্রেক করতে চাইলে প্রয়োজনীয় জুতো জামা রোদচশমা সঙ্গে রাখা প্রয়োজন। কোনও স্থানীয় ব্যক্তি বা গাইডকে সঙ্গে নিয়েই ট্রেক করা ভাল, না হলে রাস্তা হারিয়ে বিপদ ঘটার আশঙ্কা থাকে।

বিহারীনাথ মন্দির: বিহারীনাথ পাহাড়ের নামকরণ করা হয়েছে এই মন্দিরের নাম অনুযায়ী। এই মন্দিরটি শিবকে উৎসর্গীকৃত। পাহাড় ট্রেক করে মানুষ মন্দিরে পৌঁছন। এই স্থান থেকে আশেপাশের প্রাকৃতিক শোভা অনন্য।

পাহাড়ি ঝর্না: বিহারীনাথ পাহাড়ে বেশ কয়েকটি মনোরম ঝর্না রয়েছে। বর্ষাকালে এগুলির শোভা ভারি মনোরম হয়ে ওঠে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রামদা ঝর্ণা, সীতা ঝর্না এবং লক্ষ্মণ ঝর্না।

বনানী ও বন্যপ্রাণী: বিহারীনাথ পাহাড়ে রয়েছে এই অঞ্চলের সবচেয়ে গভীর বনানী। বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী এখানে দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে হাতি, বন্য শুয়োর, হরিণ এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

হাতে বেশি দিন ছুটি না থাকলেও পরিবার আর বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন বাঁকুড়ার এই অপূর্ব বিহারীনাথ পাহাড় এবং জঙ্গল থেকে, হতে পারে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.