পুনর্গঠন হবে এনটিএ, উচ্চ পর্যায়ের কমিটির ঘোষণা! নিট-ইউজির চূড়ান্ত ফল কবে, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

২০২৪ সালের সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট-ইউজি) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরই ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) পুনর্গঠনের কথা শোনা গেল কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের মুখে। তিনি এ-ও জানান, এনটিএ পুনর্গঠনের জন্য উচ্চ-পর্যায়ের কমিটিও গঠন করেছে কেন্দ্র।

কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি দেশের তরুণ এবং শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমরা এনটিএ-কে সম্পূর্ণ রূপে ত্রুটিমুক্ত করতে বদ্ধপরিকর।’’ একই সঙ্গে তিনি এ-ও জানান, অনিয়মের জন্য দায়ী কোনও ব্যক্তিই রেহাই পাবেন না। সকলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। নিট-মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানান ধর্মেন্দ্র। তাঁর সংযোজন, ‘‘আগামী দু’দিনের মধ্যে এনটিএ নিট-ইউজির চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করবে। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে পরীক্ষার মেধাতালিকা স‌ংশোধন করা হবে।’’

প্রসঙ্গত, নিট-ইউজিতে প্রশ্নফাঁসকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে দেশ জুড়ে। এই আবহে ২০২৪-এর নিট-ইউজি বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ২০২৪ সালের নিট-ইউজি পুরোপুরি বাতিলের পক্ষে নয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সাংবাদিক বৈঠক করে ধর্মেন্দ্র বলেন, ‘‘আমরা আদালতকে বলেছি যে, আমাদের সরকার স্বচ্ছ এবং ত্রুটিমুক্ত পরীক্ষা ব্যবস্থার আয়োজন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রতিশ্রুতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা এনটিএ-কে সম্পূর্ণ পুনর্গঠনের কথা ভেবেছি। সেই কারণে একটি উচ্চ-পর্যায়ের কমিটিও তৈরি করা হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, কমিটির বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে তা পর্যালোচনা করা হবে। তার পরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার নিট মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছে, ‘‘রেকর্ডে থাকা নথিগুলি প্রশ্নপত্রের পদ্ধতিগত ফাঁসের ইঙ্গিত দেয় না।’’ তবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা পরিচালনায় সামগ্রিক ভাবে পদ্ধতিগত লঙ্ঘন হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পাওয়া নথি বিশ্লেষণ করে তার প্রমাণিত হচ্ছে না।

নিটে প্রশ্নফাঁসের মতো অভিযোগকে কেন্দ্র করে বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা। সোমবার লোকসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হতেই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যে ভাবে নিটের ‘অনিয়ম’ ২৪ লক্ষ পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তাতে কি তিনি এই ঘটনার দায় নিয়ে ইস্তফা দেবেন? জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি পূর্ণ দায়িত্ব সহকারে বলছি, এনটিএ গঠনের পরে দেশে ২৪০টি পরীক্ষা হয়েছে। সাত বছরে কোনও রকম প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ নেই। ৭০ তো দূর, একটিও না! যে ঘটনাটি সম্প্রতি ঘটেছে, সেটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ধর্মেন্দ্রের এই জবাবেরই সমালোচনা করেন রাহুল। এ-ও বলেন, ‘‘দেশের কোটি কোটি মানুষ জানেন, পয়সা থাকলে ভারতের পরীক্ষার ব্যবস্থাটাকেই কিনে নেওয়া যায়। বিরোধীরাও তা-ই মনে করে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.