যৌন সংসর্গ করলেই মিলবে খাবার! সেনা জওয়ানদের শর্তের কাছে অসহায় যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানের নারীরা

যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে সেনার সঙ্গে যৌন সংসর্গ করতে বাধ্য করা হচ্ছে মহিলাদের। তার বিনিময়ে মিলছে খাবার। এমনটাই দাবি করল সংবাদ সংস্থা ‘দ্য গার্ডিয়ান’। সুদানের ওমদুরমান শহর থেকে পালিয়ে গিয়েছেন অন্তত ২০ জন মহিলা। তাঁরা দাবি করেছেন, সেনার সঙ্গে যৌন সংসর্গ করলে তবেই মেলে খাবার বা জরুরি পণ্য। সেই খাবার বা জরুরি পণ্য বিক্রি করে পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।

এক মহিলা সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, দেশের যে সব কারখানায় খাবার মজুত করা থাকে, সেখানেই মহিলাদের যৌন হেনস্থা করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বাবা-মায়ের বয়স হয়েছে। তাঁরা অসুস্থ। খাবার জোগারের জন্য মেয়েকে পাঠাইনি। আমি নিজে সেনার কাছে গেছি। খাবার জোগারের ওটাই এক মাত্র পথ ছিল। কারখানা এলাকায় ওরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে।’’ মহিলার দাবি, গত বছর মে মাসে একটি মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় সেনাদের সঙ্গে যৌন সংসর্গে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।

গত বছর ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আধাসেনা (র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স)। তার পর থেকে সে দেশে মহিলারা বার বার জওয়ানদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছেন বলে রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন সুদানে। দাবি, দেড় লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এক কোটি ১০ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া। মহিলারা অভিযোগ করেছেন, আরএসএফের দখলে থাকা এলাকায় তাঁরা বার বার ধর্ষিত হয়েছেন। এমনকি, যে বাড়ি থেকে তাঁরা পালিয়ে এসেছিলেন, সেখানে আবার ফিরতে চাইলে বা সেখান থেকে কোনও জিনিসপত্র আনতে গেলেও সেনার সঙ্গে যৌন সংসর্গ করতে বাধ্য করা হয় তাঁদের। এক মহিলার কথায়, ‘‘রান্নার জিনিসপত্র আনতে গিয়েছিলাম নিজের বাড়িতে। তার জন্য যে অত্যাচারের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, তা বলতে পারব না। কোনও শত্রুরও যাতে না হয়।’’

ওমদুরমান শহরের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, পরিত্যক্ত বাড়িগুলিতে প্রায়ই সেনা জওয়ানেরা মহিলাদের নিয়ে আসেন। তাঁদের মধ্যে থেকে এক জনকে বেছে নিয়ে চলে অত্যাচার। ওই ব্যক্তির দাবি, পাশের পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে তিনি প্রায়ই মহিলাদের আর্তনাদও শুনতে পান। ২১ বছরের এক তরুণী দাবি করেছেন, তিনি জওয়ানদের সঙ্গে যৌন সংসর্গে রাজি হননি বলে তাঁর পা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেনাবাহিনীর হাতে মহিলাদের এই হেনস্থার কথা মেনে নিয়েছেন এক জওয়ান। তবে তিনি কখনও এ রকম কিছু করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘এই ধরনের অপরাধ মানুষ ক্ষমা করবে না।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.