২০১৭ সালের প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষা (টেট)-র ওএমআর নষ্ট করা হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যের মুখের কথাতেই! প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই তৎকালীন পর্ষদ সভাপতির কথাতেই বাতিল করা হয়েছিল প্রায় আড়াই লক্ষ ওএমআর। শুক্রবার আদালতে এমনই দাবি করল পর্যদ।
বর্তমানে টেট সংক্রান্ত মামলার শুনানি হচ্ছে বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে। অতীতেও ওএমআর নষ্টের অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৪ এবং ২০১৬ সালের ওএমআর নষ্ট করা হয়েছিল, এমন তথ্য আগেই আদালতে জানিয়েছিল পর্যদ। এ বার ২০১৭ সালের টেটের ওএমআর নষ্ট করা হয়েছিল বলে মেনে নিল বোর্ড। আর তা হয়েছিল তৃণমূল বিধায়ক মানিকের অঙ্গুলিহেলনেই। শুক্রবার বিচারপতি সিংহের এজলাসে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নতুন অ্যাড-হক কমিটি এমনই জানাল।
টিনা মুখোপাধ্যায় নামে এক মহিলার দায়ের করা মামলার শুনানি ছিল শুক্রবার। সেই মামলার শুনানিতে মামলাকারী আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, তাঁর মক্কেল ২০১৭ সালে টেটে বসেছিলেন। কিন্তু উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তিনি তাঁর ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করেন। ওএমআর শিট দেখতে চেয়ে আবেদন জানান। পরে তাঁর কছে যে ওএমআর শিট আসে তা গরমিল ছিল।
সেই মামলাতে পর্ষদের বক্তব্য চেয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ। শুক্রবার পর্ষদের তরফে জানানো হয়, মানিকের নির্দেশেই ওএমআর নষ্ট হয়েছিল। যা অস্বাভাবিক এবং বেআইনি। যা শুনে বিচারপতি সিংহ প্রশ্ন করেন, ‘‘চাকরির পরীক্ষার নথি এ ভাবে মুখের কথায় নষ্ট করা যায় কি? ডিডিটাল ভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি?’’
আইন অনুযায়ী, ওএমআর নষ্ট করা হলেও তা ডিজিটালাইজ়ড ফরম্যাটে রেখে দিতে হয়। ২০১৭ সালের টেটের আড়াই লাখের বেশি ওএমআর নষ্ট করা হয়েছিল। পর্ষদের দাবি, মানিকের মুখের কথায় সেই সব ওএমআর নষ্ট করে এস বসু রায় এন্ড কোম্পানির ‘কনফিডেন্সিয়াল’ বিভাগ। শুক্রবার শুনানি শেষে বিচারপতি সিংহ ডিজিটালাইজ়ড ফরম্যাটে রাখা ওএমআর শিট তলব করেছেন। আগামী ১৪ অগস্টের মধ্যে মামলাকারীর ডিজিটালাইজ়ড ফরম্যাটে রাখা ওএমআর জমা করতে হবে পর্যদকে— এমনই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।