কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ। সে দেশের সমস্ত কলেজেই ছড়িয়ে পড়েছে হিংসার দাবানল। উত্তেজনা ক্রমে বেড়েই চলেছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে পড়তে যাওয়া ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। শুক্রবার কোচবিহারের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মেখলিগঞ্জ গেট দিয়ে বাংলাদেশের রংপুর মেডিক্যাল কলেজের বেশ কয়েক জন ডাক্তারি পড়ুয়া ভারতে প্রবেশ করেন। তাঁদের মধ্যে ছ’জন ভারতীয় ছাত্রছাত্রী। এ ছাড়া নেপালের ন’জন পড়ুয়া এবং ভুটানের ১৮ জন ছাত্রছাত্রী ভারতে ঢোকেন। এখান থেকে তাঁরা নিজেদের দেশে চলে যাচ্ছেন।
নেপাল থেকে বাংলাদেশে পড়তে যাওয়া রংপুর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র রাহুল রাই ভারতে প্রবেশ করার পর বলেন, ‘‘বর্তমানে বাংলাদেশের যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে কোনওক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে আমরা চলে এসেছি।’’ চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ ওই পড়ুয়ার। তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলাদেশের অবস্থা ভাল নয়। সমস্ত জায়গায় হিংসাত্মক পরিস্থিতি। ওখানে থাকা নিরাপদ নয় মনে করে আমরা চলে এসেছি।’’ বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ভারতে চলে আসা প্রসঙ্গে কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রংপুর মেডিক্যাল কলেজের মোট ৩৩ জন ছাত্রছাত্রী আজ (শুক্রবার) ভারতে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে ছ’জন ভারতীয়। ১৮ জন ভুটানের এবং নেপালের নয় জন ছাত্রছাত্রী রয়েছেন।’’
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত তিন দিনে কোটা সংস্কারপন্থী পড়ুয়াদের বিক্ষোভ ঘিরে যে সংঘর্ষ হচ্ছে, তাতে নিহতের সংখ্যা এখন এসে দাঁড়িয়েছে ৩০-এ। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সংরক্ষণ বিরোধীদের ‘সর্বাত্মক অবরোধ’ (কমপ্লিট শাটডাউন) কর্মসূচির মধ্যে হিংসায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২১ জনের। তাঁদের অর্ধেকই ঢাকায় হিংসার বলি।দফায় দফায় সংঘর্ষ আর হিংসার মধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন জানান, শুক্রবার দুপুর থেকেই পরবর্তী নির্দেশ ঘোষণা না-হওয়া পর্যন্ত রাজধানীতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।