সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনের জেরে উত্তেজনা বাড়ছে বাংলাদেশে। মঙ্গলবার কোটা বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে চট্টগ্রামে নিহত হয়েছেন ৩ জন। ২ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকায় এবং অন্য একজনের মৃত্যু হয়েছে রংপুরে। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের মধ্যে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এখনো অনেক জায়গায় সংঘর্ষ চলছে।
মঙ্গলবার বিকেলে ওই ৩ দেহ চট্টগ্রামে মেডিক্যাল কলেজে আনা হলে চিকিত্সকেরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিহতদের নাম, ফারুক ও ওয়াসিম আকরাম। ফারুকের বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি ফার্নিচারের দোকানে চাকরি করতেন। ওয়াসিম চট্টগ্রাম কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বাকি একজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নুজহাত ইনু বলেন, হাসপাতালে দুইজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। এর মধ্যে ফারুক নামে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
এদিন বিকেলে ঢাকায় ঢাকা কলেজের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত ওই যুবককের পরিচয় জানা যায়নি।
রংপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিস ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তার নাম আবু সাঈদ (২২)।তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়।তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাবিরোধী আন্দোলন সমন্বয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
বেলা দুইটার দিকে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ শুরু হয়।এরপর পুলিসও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।এতে আবু সাঈদ আহত হন। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করতে হবে। শুধু তাই নয় কোটা বাতিলের জন্য আইন পাস করতে হবে। আইন পাস না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। উল্লেখ্য, গত ১০ই জুলাই প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের নোটিস অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের উপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেছিল আপিল বিভাগ। রাষ্ট্র ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছিল আদালত। এরপর ৭ অগস্ট পরের শুনানির দিন রয়েছে।