আবারও অশান্ত জম্মু-কাশ্মীর। সোমবার রাতে জম্মু-কাশ্মীরের ডোডায় জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয় ভারতীয় সেনার। সঙ্গে ছিল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশও। দুই পক্ষের লড়াইয়ে অনন্ত চার জন জওয়ান এবং এক জন পুলিশ কর্মী গুরুতর আহত হন। তাঁদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় জওয়ানদের।
ভারতীয় সেনার সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) যৌথ ভাবে সোমবার সন্ধ্যায় ডোডা জেলার দেশা জঙ্গল এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়েই এই অভিযান চালানো হয়। ওই এলাকায় জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার খবর ছিল।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তল্লাশি অভিযানের সময় অতর্কিতে সেনাবাহিনীর দিকে ধেয়ে আসে গোলাবারুদ। পাল্টা জবাব দেন জওয়ানরাও। শুরু হয় দু’পক্ষের গুলির লড়াই। ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলে এই লড়াই। সেই সময়ই জঙ্গিদের ছোড়া গুলিতে চার জওয়ান জখম হন। তাঁদের মধ্যে এক জন উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিকও ছিলেন। পাশাপাশি এক পুলিশ কর্মীর গায়েও গুলি লাগে বলে খবর।
আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলাবার ভোরে তাঁদের মৃত্যু হয়। ওই জঙ্গল এলাকায় চার থেকে পাঁচ জন জঙ্গি লুকিয়ে থাকার খবর ছিল, এমনই জানান এক সেনা আধিকারিক। তাদের সন্ধানে মঙ্গলবারও তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জম্মু-কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সেই কারণে জম্মু-কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ এলাকায় ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। কাঠুয়া, কুলগাম-সহ একাধিক এলাকায় চলতি মাসেই সেনা বাহিনীর উপর হয়েছে জঙ্গি হামলা। কখনও সেনা কনভয়ে, কখনও আবার সেনা গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে গোলাগুলি।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন বছরে জম্মুতে জঙ্গি হানায় ওই নিয়ে ৪৭ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। কাশ্মীর উপত্যকার তুলনায় হামলার সংখ্যা কম হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। মোদী সরকার ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট কেন্দ্র সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করেছিল। সাবেক জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখে ভাগ করা হয়। তার পরেই কাশ্মীরের পাশাপাশি জম্মুতেও ধারাবাহিক ভাবে পাক জঙ্গিদের হামলার সূচনা।
কাশ্মীরে সেনাদের উপর বার বার হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কেন্দ্রকে আক্রম করে বলেন, “শুধু ‘ফাঁপা বক্তৃতা এবং মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’ দিলে চলবে না। সন্ত্রাস হানার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে।”