হিসাবের থেকে বেশি ভোট পেল শিন্ডে শিবির! বিধান পরিষদ ভোটে ৯ আসনে প্রার্থী দিয়ে সব ক’টিতে জয়

মহারাষ্ট্রের বিধান পরিষদের নির্বাচনে বড় জয় পেল রাজ্যের শাসক শিবির। শুক্রবারের নির্বাচনে বিধান পরিষদের ১১ আসনের মধ্যে ৯টিতেই জয় পেয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ‘মহাদ্যুতি’। তারা ৯টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল। রাত ৮টা পর্যন্ত মোট ১০ আসনের ফল ঘোষণা করা হয়। তার মধ্যে ৯টিই গিয়েছে শাসক গোষ্ঠীর ঝুলিতে।

মহারাষ্ট্র বিধান পরিষদের ‘বিধায়কদের জন্য সংরক্ষিত’ ১১টি আসনে এই দফায় ভোট হয়েছে। মোট প্রার্থী ১২। শাসক বিজেপি-শিন্ডেসেনা-এনসিপি (অজিত পওয়ার)-এর ৯ জন এবং বিরোধী জোটের তিন জন প্রার্থী ছিলেন। ২৮৮ সদস্যের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বর্তমানে ২৭৪ জন বিধায়ক রয়েছেন। জেতার জন্য এক জন প্রার্থীকে ২৩টি ভোট পেতে হবে। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তার পর শুরু হয় গণনা।

‘মহাদ্যুতি’ জোটে বিজেপি ছাড়াও রয়েছে অজিত পওয়ার গোষ্ঠীর এনসিপি এবং একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠীর শিবসেনা। বিধান পরিষদ নির্বাচনে বিজেপি পাঁচ জন প্রার্থী দিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত বিজেপি নেতা গোপীনাথ মুন্ডের কন্যা পঙ্কজা। এই পাঁচ আসনেই জয় পেয়েছে বিজেপি। শিন্ডেসেনা এবং এনসিপি (অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) দু’জন করে প্রার্থী দেয়। চার জনই জয় পেয়েছেন।

অন্য দিকে, কংগ্রেস-শিবসেনা (উদ্ধব)-শরদ পওয়ারের ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’ জোট তিন জনকে প্রার্থী করে। এখনও পর্যন্ত জয় পেয়েছেন শুধু কংগ্রেস প্রার্থী। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় কংগ্রেসের ৩৭ জন বিধায়ক থাকার সত্ত্বেও তারা এক জনকে প্রার্থী করেছিল। জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল ২৩টি ভোটের। হিসাব বলছে, কংগ্রেসের ঝুলিতে ১৪টি ভোট বেশি ছিল। পাশাপাশি ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’ জোটের অন্য দুই শরিকের মধ্যে শিবসেনা (উদ্ধব) শিবিরের প্রার্থীর জয়ের জন্য আটটি ভোট কম ছিল। ‘পেজ়েন্টস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স পার্টি’ (পিডব্লিউপি)-র প্রার্থীকে সমর্থন করেছিল শরদ পওয়ারের এনসিপি। কিন্তু সব মিলিয়ে তাদের বিধায়ক সংখ্যা ছিল মাত্র ১৩।

অপর দিকে, মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিজেপির ১০৩ জন বিধায়ক, শিন্ডেসেনার ৩৭ জন বিধায়ক এবং অজিত এনসিপি গোষ্ঠীর ৩৯ জন বিধায়ক। সব মিলিয়ে শাসক গোষ্ঠীর ন’টি আসনে জিততে হিসাব অনুযায়ী ২৮টি ভোট কম ছিল। রাজনৈতিক মহলের মতে, যে হেতু শাসক শিবির ন’টি আসনেই জয় পেয়েছে তা হলে বলাই যায় বিধান পরিষদের ভোটে ‘ঘাটতি’ মেটাতে পেরেছেন। ২৮ বা তারও বেশি ভোট বিরোধী শিবির থেকে এসেছে বলেই মনে হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিজেপির ‘হানাদারির’ শঙ্কায় কয়েক দিন আগে ‘মহাবিকাশ অঘাড়ী’ জোট বিধায়কদের রিসর্টবন্দি করেছিল। শুক্রবার সকালে সেখান থেকে কড়া নিরাপত্তায় তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় বিধানসভা ভবনে। ক্রস ভোটিংয়ের সম্ভাবনা ঘিরে জল্পনার মধ্যেই শুক্রবার ভোটগ্রহণ হয়। তার পরও ক্রস ভোটিংয়ের জল্পনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে আশানরূপ ফল করতে পারেনি বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ‘মহাদ্যুতি’। চলতি বছরেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। লোকসভা ভোটের ফল, সেই নির্বাচনে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। সেই আবহে শুক্রবারের বিধান পরিষদের ফলাফল থেকে আশার আলো দেখছে শাসক শিবির। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনের ফল কখনই বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনে প্রতিফলন ফেলবে না। কারণ, এই নির্বাচনে সরাসরি জনগণের যোগদান থাকে না। বিধায়কেরা ভোট দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.