আরও এক বার ভারত বুঝিয়ে দিল, প্রথম ম্যাচে হার নিছকই কাকতালীয় ছিল। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ২৩ রানে জিতে সিরিজ়ে এগিয়ে গেলেন শুভমন গিলেরা। এই ম্যাচে দলে ফিরলেন বিশ্বকাপজয়ী তিন ক্রিকেটার। ফলে ভারতের প্রথম একাদশে চার বদল হয়। তাতে ম্যাচ জিততে সমস্যা হয়নি। এই জয়ের ফলে টি-টোয়েন্টি সিরিজ় ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত।
এই জয়ের পরেও একটি চিন্তা থাকবে ভারতের। ৩৯ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেও জ়িম্বাবোয়েকে অল আউট করতে পারলেন না ভারতীয় বোলারেরা। জ়িম্বাবোয়ের নীচের সারির ব্যাটারেরা লড়াই করলেন। সিরিজ়ে এগিয়ে গেলেও বোলিং নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তা থাকবে শুভমনদের।
রানে ফিরলেন অধিনায়ক শুভমন। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের তিন ক্রিকেটার যশস্বী জয়সওয়াল, শিবম দুবে ও সঞ্জু স্যামসন এই ম্যাচে দলে ঢোকেন। ফলে শুভমনের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন যশস্বী। ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বরে নামতে হয় আগের ম্যাচে শতরান করা অভিষেক শর্মাকে।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল করেন শুভমন ও যশস্বী। দ্রুত রান করছিলেন তাঁরা। পাওয়ার প্লে কাজে লাগাচ্ছিলেন দুই ব্যাটার। ৪ ওভারের মধ্যেই ৫০ রান হয় ভারতের। কিন্তু তার পরে রানের গতি হঠাৎ কমে যায়। ভারতকে আটকানোর কৃতিত্ব প্রাপ্য জ়িম্বাবোয়ের অধিনায়ক সিকন্দর রাজার। তাঁর বল খেলতে সমস্যা হচ্ছিল। ৬৭ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় ভারত। সিকন্দরের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ৩৬ রান করে আউট হন যশস্বী। তিন নম্বরে নামা অভিষেক এই ম্যাচে রান পাননি। ১০ রান করে সিকন্দরের বলেই ফেরেন তিনি।
শুভমন ভাল খেলছিলেন। তাঁকে সঙ্গ দেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। ১২ ওভারের পর রানের গতি বাড়ায় ভারত। সেই সময় চালে ভুল করে ফেলেন সিকন্দর। প্রধান বোলারদের ওভার বাকি থাকার পরেও পার্ট টাইম বোলারদের হাতে বল তুলে দেন তিনি। তাঁরা রান দেন। ৩৬ বলে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন শুভমন। প্রথম দুই ম্যাচে রান না পেলেও এই ম্যাচে ভাল খেলেন তিনি।
৬৬ রান করে ব্লেসিং মুজ়ারাবানির বলে বড় শট মারতে গিয়ে আউট হন শুভমন। বাকি সময়ে ভারতের রান এগিয়ে নিয়ে যান রুতুরাজ। শেষ দিকে বেশ কয়েকটি বড় শট খেলেন তিনি। ৪৯ রানের মাথায় মুজ়ারাবানির বলেই আউট হন রুতুরাজ। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান করে ভারত।
১৮৩ রান করা কঠিন ছিল জ়িম্বাবোয়ের পক্ষে। তার উপর শুরু থেকেই উইকেট হারাতে শুরু করে তারা। দ্বিতীয় ওভারে জ়িম্বাবোয়েকে প্রথম ধাক্কা দেন আবেশ খান। ওয়েসলি মাধেভেরেকে আউট করেন তিনি। তৃতীয় ওভারে মারুমানিকে আউট করেন খলিল আহমেদ। পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই আরও এক উইকেট হারায় জ়িম্বাবোয়ে। আগের ম্যাচে নজরকাড়া ব্রায়ান বেনেটকে আউট করেন আবেশ। সেই আউটের ক্ষেত্রে বড় কৃতিত্ব রবি বিষ্ণোইয়ের। পয়েন্ট অঞ্চলে জোরে মেরেছিলেন বেনেট। শূন্যে ঝাঁপিয়ে দু’হাতে ক্যাচ ধরেন বিষ্ণোই।
পাওয়ার প্লে-র পরেও নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে জ়িম্বাবোয়ে। পেসারদের পরে স্পিনারের দাপট দেখান। ওয়াশিংটন সুন্দর এক ওভারে অধিনায়ক সিকন্দর ও জোনাথন ক্যাম্পবেলকে আউট করেন। সিকন্দর ভাল খেলছিলেন। কিন্তু জরুরি রানরেট বেড়ে যাওয়ায় বড় শট মারতে গিয়ে ফেরেন তিনি। ৩৯ রানে জ়িম্বাবোয়ের অর্ধেক দল সাজঘরে ফিরে যায়।
ষষ্ঠ উইকেটে জুটি বাঁধেন ডিয়ন মেয়ার্স ও ক্লাইভ মাদানদে। প্রথম দিকে রানের গতি খুব বেশি না হলেও উইকেট হারাননি তাঁরা। কিছুটা সময় কাটানোর পরে হাত খোলেন দুই ব্যাটার। কয়েকটি বড় শট এলেও জরুরি রানরেট বেড়েই চলেছিল। কিন্তু হাল ছাড়েননি তাঁরা। লড়াই করেন।
শেষ ৫ ওভারে দরকার ছিল ৭৩ রান। ভারতের প্রধান বোলারেরা ৩০ বলে দিলেন ৪৯ রান। অনেক চেষ্টা করেও জেতাতে পারলেন না মেয়ার্স ও মাদানদে। বড় শট খেলার চেষ্টায় উইকেটও পড়ল। ৩৭ রানে আউট হলেন মাদানদে। মেয়ার্স শেষ দিকে বড় শট খেলেন। অর্ধশতরান করে দলকে কাছে নিয়ে গেলেও জেতাতে পারেননি তিনি। ৬৫ রানে অপরাজিত থাকেন মেয়ার্স। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করল জ়িম্বাবোয়ে। ২৩ রানে হেরে মাঠ ছাড়ল তারা।