বৃষ্টির দেখা নেই। সেই গুমোট। সেই অস্বস্তি। তবে বর্ষা প্রবেশ করেছে দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলায়। তবু কাঙ্খিত বৃষ্টি এখনও পর্যন্ত পায়নি দক্ষিণবঙ্গ। বিচ্ছিন্ন ভাবে পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রাম জেলা গত ৫ দিনে কিছুটা বেশি বৃষ্টি পেলেও গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গ কার্যত আশানুরূপ বৃষ্টি পায়নি। পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে জুন মাসে দক্ষিণবঙ্গে ৭২ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি থাকবে। অন্যদিকে জুন মাসে উত্তরবঙ্গ ৬৪ শতাংশ অতিরিক্ত বৃষ্টি পেয়েছে। আজ বুধবার দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলায় ফেয়ারলি ওয়াইড স্প্রেড অর্থাৎ জেলাপিছু প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা জুড়ে বজ্র বিদ্যুৎ সহ মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস। বৃষ্টিপাতের সময় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। বিশেষত উপকূল এবং পশ্চিমের জেলায় হাওয়ার গতিবেগ তুলনামূলক বেশি থাকবে। শুক্রবার থেকে অনেকটা বেশি বৃষ্টি পাবে দক্ষিণবঙ্গ। শনিবার থেকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত নিবিড় বৃষ্টি পাবে দক্ষিণবঙ্গ। অর্থাৎ একটানা বৃষ্টি চলবে। কখনও মাঝারি কখনও ভারী বৃষ্টির জেরে অনেকটা কমবে তাপমাত্রা।
গত ২৪ ঘন্টায় উত্তরবঙ্গের হাসিমারাতে ২১৮.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বারোভিসা এলাকায় ১৭৯.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে ১৬৬.৫ মিলিমিটার। আজও একইরকম ভাবে প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হবে উত্তরের জনজীবন। বিশেষত কোচবিহার আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় আজ ভারী থেকে অতিভারী এবং কোনো কোনো এলাকায় অতি প্রবল (প্রায় ২০০ মিলিমিটার) বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। কাল বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে উত্তরে বৃষ্টির প্রাবল্য কিছুটা কমবে। পার্বত্য জেলা দার্জিলিং এবং কালিম্পং এবং সমতলের নিচের দিকের জেলা মালদহ এবং দুই দিনাজপুরে বজ্র বিদ্যুৎ সহ মাঝারি বৃষ্টি চলবে প্রায় গোটা সপ্তাহ।
মৌসুমী বায়ু
শুক্রবারের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের বাকি অংশে প্রবেশ করবে বর্ষা। এখনও পর্যন্ত পশ্চিমের কিছু জেলা বর্ষার অপেক্ষায় আছে। ২১ জুন দক্ষিণবঙ্গের ৫ জেলায় বর্ষা প্রবেশ করেছে। তবে সাপোর্ট সিস্টেম অর্থাৎ অক্ষরেখা ও ঘূর্ণাবর্তের মতো কোনো অনুঘটকের অভাবে তা পর্যাপ্ত বৃষ্টি ঘটাতে পারছে না। পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া পর্যন্ত এসে তা ২১ তারিখ থেকে আটকে আছে। কলকাতা হাওড়া হুগলি নদিয়া মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম জেলায় তার লক্ষ্যনীয় প্রভাব এখনও পর্যন্ত নেই। শুক্রবারের মধ্যে এই সব জেলায় সক্রিয় মৌসুমী বায়ু প্রভাব বিস্তার করবে। পাশাপাশি শনিবারের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ ছত্তিশগড় ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের বাকি অংশে ঢুকে পড়বে মৌসুমী বায়ু। উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের কিছু এলাকায় শনিবার মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করবে।
কলকাতা
আজ সকালের দিকে আকাশ পরিস্কার থাকলেও বেলা বাড়লে মেঘের আনাগোনা বাড়বে। তবে আজ কলকাতায় আশানুরূপ বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। পরশু শুক্রবার থেকে কলকাতায় বৃষ্টি বাড়বে। উইকেন্ডে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতায়।
পরিসংখ্যান
রাতের তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রি থেকে সামান্য বেড়ে ২৯.৪ ডিগ্রি। যা স্বাভাবিকের থেকে ২.৬ ডিগ্রি বেশি। কাল দিনের তাপমাত্রা ৩৪.২ থেকে কিছুটা বেড়ে ৩৫.৬ ডিগ্রি। যা স্বাভাবিকের থেকে ২.৭ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ভোরে ৫৫ শতাংশ। বেলায় ৮৯ শতাংশ। বিকেলের দিকে প্রায় ৯৬ শতাংশ।