বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী ব-দ্বীপ তৈরি করা গঙ্গানদী আদপে ছিলই না তার এখনকার জায়গায়? এমনই অদ্ভুত চিত্তাকর্ষক এবং আশ্চর্য এক কথা শোনা গেল গঙ্গা নিয়ে নতুন করা এক গবেষণায়। হিন্দু তথা ভারতীয় মনে গঙ্গার বিপুল প্রভাব। নতুন গবেষণা বলছে, সেই ভয়ংকর ভূমিকম্পের জেরে খুব আচমকাই বদলে গিয়েছিল গঙ্গার গতিপথ। কম নয়, এর জেরে প্রায় ১০০ কিমি সরে এসেছিল গঙ্গা! যা, এই সময়ে ঘটলে যার ভয়ংকর প্রভাব পড়ত ১৪ কোটি মানুষের উপর!
আমেরিকার কলুম্বিয়া ক্লাইমেট স্কুলের লামোঁ-দোহেরতি আর্থ অবজারভেটরির ভূপদার্থবিদ মাইকেল স্টেকলার এই গবেষণাটি সঙ্গে যুক্তদের একজন। তিনি হাজার-হাজার বছর আগের ভূমিকম্প এবং তার জেরে গঙ্গার গতিপথ বদলে যাওয়া নিয়ে বলেন, এর কোনও তথ্যপ্রমাণ এখনও নেই, বিষয়টি ‘আনডকুমেন্টেড’, তবে, সেই সময়ে ৭-৮ মাত্রার এক ভূমিকম্প ঘটেছিল বলে মনে করা যেতে পারে। তখন গঙ্গা বইত এখনকার বাংলাদেশ দিয়ে। সেই সময়ের গঙ্গা যাকে-তাকে ভাসিয়ে যেখানে-সেখান দিয়ে বয়ে গিয়েছিল বলেই অনুমান!
নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, বাংলাদেশ ভূখণ্ড দিয়ে বয়ে যাওয়া সেই সময়ের গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত ছিল। পরে সেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। ভারতীয় উপমহাদেশীয় প্লেট ও হিমালয়ান প্লেটের মধ্যে ঘটা এক সংঘর্ষের জেরেই এমন যুগান্তকারী বিপর্যয় ঘটেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
নদী অবশ্যই গতিপথ পরিবর্তন করে। গঙ্গা আজও পরিবর্তনশীল। পৃথিবীর সব জীবিত নদীই তাই। কিন্তু গঙ্গার এই পুরাকালের পরিবর্তনটি ঘটেছিল এক রাতে, লহমায়। ভূমিকম্পের ফলেই এই অচিন্তনীয় ব্যাপারটি ঘটেছিল।