ইউরো কাপে অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে কোনও মতে জিতল ফ্রান্স, মন ভরাতে পারলেন না এমবাপেরা

বাকি বড় দলগুলির মতো জিতেই ইউরো কাপ অভিযান শুরু করল ফ্রান্স। কিন্তু সোমবার অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে তাদের খেলা মন ভরাতে পারল না। আত্মঘাতী গোলে কোনও মতে ১-০ ব্যবধানে জিতল তারা। অস্ট্রিয়ার ডিফেন্ডার ভুল না করলে তিন পয়েন্ট পাওয়াই হত না তাদের। বিপক্ষের জালে এক বারও বল জড়াতে পারলেন না এমবাপেরা। উল্টে যে ভাবে একের পর এক সুযোগ নষ্ট করলেন তা চিন্তায় রাখতে বাধ্য। উল্টো দিকে থাকা অস্ট্রিয়া নিজেদের সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ম্যাচটা জিততেই পারত।

প্রথম থেকে বল ধরে রেখে আক্রমণে এগোচ্ছিল ফ্রান্স। পিছন থেকে শুরু হচ্ছিল তাদের আক্রমণ। প্রতিপক্ষকে মেপে নিয়ে উপরে ওঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। তা কাজেও দিচ্ছিল। ক্রমাগত চাপের মুখে অস্ট্রিয়া মন দিয়েছিল নিজেদের দুর্গ রক্ষা করায়। দু’দলের লড়াই হচ্ছিল মাঝমাঠেও।

শুরুর দিকে ফ্রান্স দু’-একটি সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। সেখানে অস্ট্রিয়া সুযোগ পেলেও ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ করে যাচ্ছিল। ফ্রান্সের খেলার মধ্যে সেই ছন্দবদ্ধ ভাবটা ছিল না। ২০১৮ বা ২০২২-র বিশ্বকাপে যে ভাবে মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ তৈরি করেছিল, সেটা ছিল না ফ্রান্সের খেলায়।

অতীতে মাঝমাঠ থেকে ফ্রান্সের খেলা নিয়ন্ত্রণ করতেন পল পোগবা এবং আঁতোয়া গ্রিজম্যান। এ দিন গ্রিজম্যান থাকলেও পোগবার মতো ‘প্লে-মেকার’ ছিলেন না। ফলে এমবাপের সঙ্গে ওসমানে দেম্বেলে, মার্কাস থুরামের মতো খেলোয়াড় থাকলেও সুযোগ তৈরি হচ্ছিল না। এনগোলো কান্টে বা আন্দ্রিয়েন রাবিয়ঁ থাকলেও তাঁরা যথেষ্ট সুযোগ তৈরি করতে পারেননি।

তবু প্রথমার্ধে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ৪৫ মিনিটের মধ্যে এক বারই ছন্দপতন হয় অস্ট্রিয়ার। ডান দিক থেকে আক্রমণে উঠেছিল ফ্রান্স। বিপক্ষের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে বল ভাসিয়েছিলেন এমবাপে। কিন্তু কোনও সতীর্থ তাঁর নাগাল পাননি। তবে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই ঢুকিয়ে দেন ম্যাক্সিমিলিয়ান উবের।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আহত হন গ্রিজম্যান। বিপক্ষের খেলোয়াড়ের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে ছিলেন। বল কাড়াকাড়ি করতে গিয়ে গ্রিজম্যানকে মাঠের ধারে সাইনবোর্ডের দিকে ঠেলে দেন উবের। সাইনবোর্ডে ধাক্কা খেয়ে রক্তপাত হয় ফরাসি ফুটবলারের। কেটে যায় কপাল। গ্রিজম্যান রেগেও যান। তবে রেফারি হলুদ কার্ড দেখাননি। মাথায় ব্যান্ডেজ় বেঁধে কিছু ক্ষণ পরেই মাঠে ফেরেন গ্রিজম্যান।

৫৫ মিনিটে দিনের সেরা সুযোগ মিস করেন এমবাপে। মাঝমাঠ থেকে এমবাপেকে পাস দেন রাবিয়ঁ। একাই বল টেনে বক্সে পৌঁছে যান এমবাপে। সামনে একা গোলকিপার ছিলেন। গোলের ডান দিকে শট রাখতে গিয়ে বাইরে মেরে বসেন এমবাপে। নিজেও তার পর তা বিশ্বাস করতে পারেননি। ডাগআউটে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়েন কোচ দিদিয়ের দেশঁ।

এর পরে বেশ কিছু ক্ষণ একটানা আক্রমণ করে যায় ফ্রান্স। কিন্তু গোল করতে পারেনি। ৮৫ মিনিটের মাথায় অস্ট্রিয়ার ডিফেন্ডার ডানসোর সঙ্গে সংঘর্ষে নাক ফাটে এমবাপের। রক্তে ভিজে যায় তাঁর মুখ এবং জার্সি। খেলা বন্ধ থাকে কিছু ক্ষণ। এমবাপেকে তুলে নিতে চেয়েছিলেন কোচ দেশঁ। কিন্তু রক্তপাত পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার আগেই এমবাপে মাঠে ফিরে আসেন এবং নাক ধরে বসে পড়েন। রেফারি তাঁকে হলুদ কার্ড দেখান।

তবে শেষ দিকে আর বিপদ হয়নি। গোল ধরে রাখে ফ্রান্স। জিতলেও অবশ্য চিন্তা রয়েই গেল তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.