বিশ্বের এক নম্বর ও ১৭ নম্বর দল মুখোমুখি হলে কী হতে পারে? কোনও অঘটন না ঘটলে, বিশ্বের এক নম্বর দলেরই হেসেখেলে জেতার কথা। আর ঠিক সেটাই ঘটল বুধবার। চলতি কাপ যুদ্ধের অন্য়তম আয়োজক দেশ আমেরিকাকে ভারত হেলায় হারিয়ে দিল! আর এর সঙ্গেই ভারত চলে গেল বিশ্বকাপের সুপার এইটে। নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই কাপযুদ্ধের ২৫ নম্বর ম্য়াচে অশর্দীপ সিংয়ের (Arshdeep Singh) আগুনে প্রথমে ছারখার হয়ে যায় আমেরিকা। তারপর সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) দাপুটে অর্ধ-শতরান করে ভারতকে জিতিয়ে দেন অনায়াসে।
পাকিস্তানকে রুদ্ধশ্বাস ম্য়াচে ছয় রানে হারানোর পর এবার রোহিত শর্মা অ্য়ান্ড কোং দ্বিতীয় ম্য়াচে আমেরিকাকেও উড়িয়ে দিল। কানাডা ও পাকিস্তানকে ব্য়াক-টু-ব্য়াক ম্য়াচে হারিয়ে দেওয়ায়, আমেরিকাকে নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলেছে। তবে ভারত দিনের শেষে বুঝিয়ে দিল যে, টি-২০ ফরম্য়াটে কারা আইসিসি ব়্য়াঙ্কিংয়ে একে ও কারা ১৭ নম্বরে!
এদিন টস জিতে রোহিতের প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত যে যথার্থ, তা প্রমাণ করে দিলেন অর্শদীপ। একাই চার উইকেট তুলে অ্য়ারন জোন্সের আমেরিকার শিরদাঁড়া ভেঙে দেন তিনি। অর্শদীপ প্রথম ওভারেই তুলে নেন ওপেনার শায়ন জাহাঙ্গীর ও তিনে নামা আন্দ্রিয়েস গাউসকে। তিন রানে আমেরিকার দুই উইকেট চলে যায়। এরপর আমেরিকা ধারাবাহিক ভাবে উইকেট হারাতে শুরু করে।
দলের সর্বোচ্চ রান নীতীশ কুমারের। পাঁচে নেমে ২৩ বলে ২৭ রান করেন তিনি। অর্শদীপই আউট করেন নীতীশকে। যদিও এই উইকেটের কৃতিত্ব প্রায় সিংহভাগই মহম্মদ সিরাজের। মিডউইকেটে পিছনে ঝুঁকে যে ক্য়াচ তিনি তালুবন্দি করলেন, তা এককথায় অবিশ্বাস্য! এরপর রানের বিচারে দুয়ে থাকবেন স্টিভেন টেলর। যিনি ওপেন করতে নেমে ৩০ বলে ২৪ করেছিলেন। বাকিরা সকলেই ২০ রানের মধ্য়ে ফিরে যান। আমেরিকা অনেক লড়াই করে কুড়ি ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ১১০ রান তুলতে পেরেছিল। অর্শদীপ ছাড়াও ভারতের হয়ে উইকেট পেয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া (২) ও অক্ষর প্য়াটেল (১)।
মাত্র ১১০ রান তাড়া করতে নেমে ভারত যে হেলায় জিতে যাবে বলেই মনে করেছিলেন অনেকে, কিন্তু বাস্তবে তেমনটা ঠিক হয়নি। প্রাক্তন ‘ভারতীয়’ ক্রিকেটার সৌরভ নেত্রভালকর অন্য়রকম পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন। মাত্র ২.২ ওভারের মধ্য়ে ভারতের দুই ব্য়াটিং স্তম্ভ ও এই বিশ্বকাপের নতুন ওপেনিং জুটিকে তিনি ডাগআউটের রাস্তা দেখিয়ে দেন।
কোহলি কোনও রান না করেই সৌরভের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসেন। যেভাবে কোহিল ক্য়াচ আউট হলেন, তা বিশ্বাস করাও কষ্টকর। এরপর সৌরভ তৃতীয় ওভারে এসে রোহিতকেও ফিরিয়ে দেন। রোহিতও বিরাটের মতোই ক্য়াচ তুলে দিয়ে ফিরে আসেন। মাত্র তিন ওভারের মধ্য়ে ১০ রানে ২ উইকেট চলে যাওয়ায় ভারত কিছুটা হলেও চাপে পড়েছিল বটে। তবে ভারতের ব্য়াটিং লাইন-আপ রত্নখচিত। ফলে সমস্য়ার ভাইরাস সেভাবে ঢুকতে পারেনি টিমে। মাঝেমধ্য়ে ধাক্কা এসেছিল বটে।
রোহিত-বিরাট ফেরার পর তিনে নেমে ঋষভ পন্থ ২০ বলে ১৮ রান করে ফিরে যান। আলি খানের ইয়র্কার তাঁর উইকেট ছিটকে দেয়। ঋষভ মোটামুটি ডিজাস্টার ম্য়ানেজমেন্টের কাজটাই করছিলেন। এরপর বিশ্বের এক নম্বর ব্য়াটার সূর্যকুমার যাদব (৪৯ বলে ৫০) ও শিবম দুবে (৩৫ বলে ৩১) মিলে বাকি কাজটা করে দেন। ভারত ১০ বল হাতে রেখে সাত উইকেটে ম্য়াচ জিতে নেয় হেসেখেলে। ভারত এরপর কানাডার বিরুদ্ধে ১৫ জুন খেলবে।