সোমবার নিজ বাসভবনে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম বৈঠকে মন্ত্রক বন্টনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকে কোনো বড় বদল দেখা গেল না। এদিকে বাংলার দুই মন্ত্রীর মধ্যে সুকান্ত মজুমদার প্রতিমন্ত্রী হলেও তাকে দুটি দপ্তরের দায়িত্বে আনা হয়েছে।
অপরিবর্তিতই আছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। অমিত শাহের হাতেই আছে এই দপ্তর। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আছে রাজনাথেরই, অর্থমন্ত্রীও রয়েছেন নির্মলা সীতারামন। এদিকে রেলও আছে অশ্বিনী বৈষ্ণবের হাতে, সঙ্গে রয়েছে তথ্য সম্প্রচারও। সড়ক পরিবহন মন্ত্রক আছে নীতিন গড়করির হাতে। বিদেশ মন্ত্রী আছেন এস জয়শংকর। এদিকে বাংলা থেকে দুই প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে শান্তনু ঠাকুরের মন্ত্রক পরিবর্তিত হয়নি। তিনি জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হিসেবেই আছেন। তবে মন্ত্রিসভায় নতুন ঢুকেছেন সুকান্ত মজুমদার। প্রতি মন্ত্রী হলেও তাঁকে দুটি দপ্তরের দায়িত্বে আনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে দুটি দপ্তর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। একটি শিক্ষা ও অন্যটি উত্তর পূর্ব উন্নয়ন দপ্তর। এই দুই দপ্তরের মাধ্যমেই তাঁর কাছে কাজ করার সুযোগ থাকবে। নিজে একজন অধ্যাপক হবার কারণেই সম্ভবত তাকে শিক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বিজেপির এখন সবচেয়ে বেশি যেদিকে নজর সেটা উত্তর- পূর্ব ভারত। সেখানে উন্নয়নের জোয়ার আনার ঘোষণা করেই মানুষের মন জয় করতে চাইছেন মোদী। অন্যদিকে সুকান্ত মজুমদার নিজে উত্তরবঙ্গের, ফলে উত্তর- পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রক সুকান্ত মজুমদারের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই দপ্তরকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিজের এলাকা সহ
উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন যজ্ঞের কাজ করার সুযোগ পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
হরিয়ানার মনহরলাল খাট্টার পেয়েছেন বিদ্যুৎ ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রক। শিবরাজ সিং চৌহান পঞ্চায়েত এবং গ্রাম উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষি মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন। জেপি নাড্ডাকে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রী হয়েছেন মনসুখ মান্ডব্য। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকেরও দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। অন্নপূর্ণা দেবীকে নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তর দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রী হয়েছেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। ভারী শিল্প গেছে কুমারস্বামীর কাছে। চিরাগ পাশোয়ান পেয়েছেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের দায়িত্ব। জি কিশন রেড্ডি হয়েছেন কয়লা ও খনি মন্ত্রী। বস্ত্রমন্ত্রী গিরিরাজ সিং। লালন সিং পেয়েছেন জোড়া দায়িত্ব। একদিকে তাঁর পঞ্চায়েতি রাজ, তেমনি তার সাথে রয়েছে মৎস্য, পশুপালন এবং দুগ্ধ দপ্তর।
অসামরিক বিমানমন্ত্রী হয়েছেন রামমোহন নাইডু। জিতেন্দ্র মাঝি ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প মন্ত্রকের মন্ত্রী। সংসদীয় মন্ত্রী হয়েছেন কিরণ রিজেজু। বাণিজ্য মন্ত্রী হয়েছেন পীযুষ গোয়েল। টেলি যোগাযোগ মন্ত্রকের দায়িত্বে এসেছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। জাহাজ মন্ত্রী হয়েছেন সর্বানন্দ সানোয়াল। সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী হয়েছেন গজেন্দ্র সিং। অজয় টান্টা ও হর্স মালহোত্রা সড়ক পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে এসেছেন। হরদীপ সিং পুরি পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী, পি আর পাটিল জলশক্তি মন্ত্রক, ভূপেন্দ্র যাদব পরিবেশ মন্ত্রী।
রবিবার সন্ধ্যায় তৃতীয় বারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে শপথ নিয়েছিলেন আরও ৭১ জন। তাদের মধ্যে ৩০ জন পূর্ণ মন্ত্রী ৩৬ জন প্রতিমন্ত্রী। বাকিরা স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত। সোমবার তাদের মধ্যে দপ্তর বন্টন করা হলো। ১৮ জুন থেকে নতুন লোকসভা অধিবেশন শুরু হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। ২০ জুন স্পিকার নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। ২১ জুন দুই পক্ষের যৌথ অধিবেশন হতে পারে, সেখানে বক্তব্য রাখবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।