তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদী। রবিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তার আগে সকাল সকাল মোদীকে দেখা গেল রাজঘাটে। মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধের সামনে গিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন তিনি। গেলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সৌধ ‘সদৈব অটল’-এর কাছেও। সেখানেও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। গান্ধী এবং বাজপেয়ীর উদ্দেশে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর তাঁরা রাজধানীর জাতীয় যুদ্ধ স্মারক বা ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের কাছে যান। সেখানে পুষ্পস্তবক দিয়ে প্রার্থনা করেন মোদী।
রবিবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণ করবেন মোদী। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। মোদীর পাশাপাশি তাঁর পরিষদীয় সদস্যেরাও শপথ গ্রহণ করবেন রবিবার সন্ধ্যায়। অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু-সহ একাধিক রাষ্ট্রনেতা।
শুধু আন্তর্জাতিক নয়, দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। সূত্র উল্লেখ করে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেকেও ডাকা হয়েছে ওই অনুষ্ঠানে। তবে তিনি যাবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বাকি শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। শনিবার কালীঘাটের সাংবাদিক বৈঠকে মমতা জানিয়েছেন, মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তাঁকে ডাকা হয়নি। আমন্ত্রণ পেলেও তিনি যেতেন না।
লোকসভা নির্বাচনে ২৯২টি আসনে জয় পেয়েছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ পেয়েছে ২৩৩টি আসন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে এনডিএ সরকার গড়লেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। ফলে তারা কিছুটা চাপে রয়েছে। সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বিজেপিকে শরিক দলগুলির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে। এনডিএ শরিকেরা মোদীকেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিয়েছেন। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে এসেছেন মোদী। নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত তিনি কার্যনির্বাহী হিসাবে রয়েছেন। রবিবার সরকার গড়বে এনডিএ।
মোদীর শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান উপলক্ষে সাজ সাজ রব দিল্লিতে। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে রাজধানী শহর। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ের বন্দোবস্ত করেছে দিল্লি পুলিশ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের কারণে দিল্লির আকাশসীমাতেও রবিবার বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিকেল ৩টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ থাকবে রাজধানীর আকাশে। যদিও রোজকার নথিভুক্ত বিমানের উপর সেই বিধিনিষেধ প্রযুক্ত হবে না।