বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। প্রতিটি আইসিসি প্রতিযোগিতায় যে দুই দলের দিকে সবার নজর থাকে সেই ভারত ও পাকিস্তান রবিবার মুখোমুখি। নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে হবে খেলা। সেই ম্যাচের আগে কোথায় এগিয়ে রয়েছেন রোহিত শর্মারা? তাঁরা কোথায় পিছিয়ে রয়েছেন?
ভারতের তিন শক্তি—
বিশ্বকাপের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের পরিসংখ্যান ভাল। বড় ম্যাচে স্নায়ুর চাপ ধরে রাখতে পারেন বলেই এতটা সফল রোহিতেরা। রবিবারের ম্যাচের আগে ভারত তিনটি ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে পাকিস্তানের থেকে।
১) ওপেনিং জুটি— এ বার বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা ওপেন করছেন। ভারতের সেরা দুই ক্রিকেটারের হাতেই থাকবে দলকে ভাল শুরু দেওয়ার দায়িত্ব। আইপিএলে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন বিরাট। রোহিত প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভাল খেলেছেন। ওপেন করতে নামায় এক দিকে যেমন তাঁরা পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারবেন, অন্য দিকে সবচেয়ে বেশি বল খেলারও সুযোগ পাবেন। এই ওপেনিং জুটি ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দিতে পারেন।
২) হার্দিকের ফর্ম— বিশ্বকাপের আগে যে হার্দিক পাণ্ড্যকে নিয়ে সমর্থকেরা চিন্তায় ছিলেন সেই হার্দিক ফর্মে ফিরেছেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ ও আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে ভাল খেলেছেন। ব্যাট করার পাশাপাশি বল হাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন হার্দিক। তিনি এক দিকে যেমন মাঝের ওভারে দলের রান তোলার গতি বাড়াতে পারেন, অন্য দিকে তেমনই মাঝের ওভারে উইকেট তুলতে পারেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়ের নায়ক হয়ে উঠতে পারেন হার্দিক।
৩) ভারতের পেস বোলিং— নিউ ইয়র্কের পিচে পেসারেরা সাহায্য পাচ্ছেন। ভারতীয় পেসারেরা প্রস্তুতি ম্যাচ ও আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে দেখিয়েছেন, এই পরিবেশে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন তাঁরা। বাঁহাতি পেসার আরশদীপ সিংহ নতুন বলে ভাল সুইং করাচ্ছেন। মহম্মদ সিরাজও পিচ কাজে লাগিয়ে বল করছেন। যশপ্রীত বুমরা আবার নতুন বলের পাশাপাশি পুরনো বলেও সমান ভয়ঙ্কর। এই বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে খেলতে সমস্যায় পড়বেন পাকিস্তানের ব্যাটারেরা।
ভারতের তিন দুর্বলতা—
টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানও বেশি শক্তিশালী দল। তাই কোনও ভাবেই তাদের হালকা ভাবে নেওয়া যায় না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনটি ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হতে পারে ভারতকে।
১) বাঁহাতি পেসারের জুজু— গত কয়েকটি আইসিসি প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসারেরা সমস্যায় ফেলেছেন ভারতীয় ব্যাটারদের। নিজেদের দলে বাঁহাতি পেসার কম থাকায় অনুশীলনের অভাব সমস্যায় ফেলেছে তাঁদের। ২০২১ সালের বিশ্বকাপে মহম্মদ আমির, বা পরবর্তী কালে শাহিন আফ্রিদি, তাঁদের সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন রোহিত, বিরাটেরা। এ বার আমির ও শাহিন একসঙ্গে খেলবেন। ভারতের বিরুদ্ধে তাঁদের শুরু থেকেই ব্যবহার করবেন অধিনায়ক বাবর আজ়ম। বাঁহাতি পেসারদের মোকাবিলা করতে না পারলে চাপে পড়বে ভারত।
২) ফিনিশারের অভাব— এ বার ভারতীয় দলে ফিনিশারের ভূমিকায় রয়েছেন শিবম দুবে ও রবীন্দ্র জাডেজা। শিবম আইপিএলে ভাল খেললেও ভারতীয় জার্সিতে এখনও তেমন কিছু করতে পারেননি। ব্যাট হাতে জাডেজার ফর্মও খুব একটা ভাল নয়। তাই তাঁরা কতটা ফিনিশারের কাজ করতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
৩) স্পিন আক্রমণে বৈচিত্রের অভাব— ভারতের পেস আক্রমণে বৈচিত্র থাকলেও স্পিন আক্রমণে ততটা নেই। জাডেজা ও অক্ষর একই ধরনের বোলার। কুলদীপ রিস্ট স্পিনার হলেও ব্যাট করতে পারেন না। যুজবেন্দ্র চহাল জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘ দিন খেলেননি। ফলে তিনি কতটা তৈরি তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ব্যাটিংয়ে গভীরতা বাড়াতে জাডেজা ও অক্ষরকে খেলাতে বাধ্য হচ্ছে ভারত। কিন্তু তাঁরা ব্যর্থ হলে বিকল্প পরিকল্পনা কম রয়েছে দলের হাতে। তাতে সমস্যায় পড়তে পারেন রোহিত।