গণনাকেন্দ্রে ৩ বলয়ের নিরাপত্তা, গোলমাল রুখতে তৈরি পুলিশের বিশেষ বাহিনী

 তিন বলয়ের নিরাপত্তা গণনাকেন্দ্রগুলিতে। ভোট গণনার সময় যাতে কোনও সমস‌্যা না হয়, তার জন‌্য তৈরি থাকছে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী। একই সঙ্গে ভোটের ফল ঘোষণার পর যাতে শহরে কোনও সংঘর্ষ বা হিংসা না হয়, তার জন‌্য একেকটি ডিভিশনে তৈরি ৫০ জনের বিশেষ পুলিশ বাহিনী। এছাড়াও অন্তত ৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী তৈরি থাকছে ভোট পরবর্তী হিংসার মোকাবিলায়।

পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতায় ১৪টি গণনাকেন্দ্রে মোট চারটি লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা হবে। ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের গণনা হবে হেস্টিংস হাউসের সিস্টার নিবেদিতা জেনারেল ডিগ্রি কলেজ ফর গার্লস, মহিলা বিএড কলেজ, মাল্টিপারপাজ গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল, স্টেট ইন্সটিটিউট অফ ফিজিক‌্যাল এডুকেশন ফর উওমেন। যাদবপুর কেন্দ্রের গণনা হবে বিজয়গড় জ্যোতিষ রায় কলেজে। কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের গণনা হবে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের একাধিক কেন্দ্রে। কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের গণনা হবে রাজডাঙা মেন রোডের গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, জোকার ব্রতচারী বিদ‌্যাশ্রম হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, ঠাকুরপুকুরের বিবেকানন্দ কলেজ, খিদিরপুরের সেন্ট থমাস বয়েজ স্কুল, লর্ড সিনহা রোডের সাখোয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাই স্কুল, বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাই স্কুল, বাবাসাহেব আম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটিতে।

প্রত্যেকটি গণনাকেন্দ্রের নিরাপত্তার মূল দায়িত্বে থাকছেন একজন করে ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক। তাঁর আওতায় সারাক্ষণ থাকছেন অন্তত একজন করে অ‌্যাসিস্ট‌্যান্ট কমিশনার, তিন থেক পাঁচজন করে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক, পর্যাপ্ত সংখ‌্যক সাব ইন্সপেক্টর, অ‌্যাসিস্ট‌্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর ও কনস্টেবল। একেকটি গণনা কেন্দ্রে অন্তত দুশো পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। স্ট্রং রুম থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রগুলিতে নিয়ে আসা হবে ইভিএম। গণনা কেন্দ্রের নিরাপত্তা থাকছে তিনটি বলয়ে। যে ঘরে ভোটকর্মীরা গণনা করবেন, সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনী। এর বাইরের বলয়ে থাকছে সশস্ত্র পুলিশ।

ওই অংশে যাতে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে, সেই দায়িত্বে থাকছে ওই পুলিশ বাহিনী। গণনাকেন্দ্রের বাইরের অংশ, অর্থাৎ তৃতীয় বলয়েও থাকছে পুলিশ। কোনও পরিচয়পত্র ছাড়া যাতে কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে, তা দেখবে ওই তৃতীয় বলয়ের পুলিশ। আবার যাঁদের পরিচয় থাকবে, তাঁরা যাতে নির্বাচন কমিশনের সব নিয়ম মেনে প্রবেশ করেন, সেদিকেও নজর থাকবে এই পুলিশকর্মী ও আধিকারিকের। ভোটের ফল বের হওয়ার পর গণনাকেন্দ্রের বাইরে বিজয়োৎসব ঘিরে যাতে কোনও সমস‌্যা না হয়, সেদিকেও থাকবে পুলিশের নজর।

এদিকে, ভোটের ফল বের হওয়ার পর যাতে হিংসা না হয়, সেদিকে থাকছে লালবাজারের নজর। ভাঙড় অঞ্চলে থাকছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী। ভাঙড়ের যে অঞ্চলগুলিতে ভোটের দিন গোলমাল হয়েছে, সেখানে পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে মোতায়েন থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও। ভাঙড়ের বিভিন্ন অঞ্চলে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দেবে। এ ছাড়াও কলকাতা পুলিশের আওতায় থাকা অন‌্য ডিভিশনগুলিতেও থাকছে অতিরিক্ত পুলিশ। ভোটের ফল বের হওয়ার পরও কলকাতায় থাকছে অন্তত ৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।

এই সংখ‌্যা বৃদ্ধিও পেতে পারে। এ ছাড়াও একেকটি ডিভিশনে একজন করে আধিকারিকের আওতায় থাকছে ৫০ জন পুলিশকর্মীর টিম। ওই টিম ও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিন ও রাতের বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় টহল দেবে। কোথাও কোনও গোলমালের খবর পেলে যাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুলিশবাহিনী ওই জায়গায় পৌঁছতে পারে, সেই ব‌্যবস্থা করা হচ্ছে। যে কোনও গোলমাল ঠেকাতে প্রত্যেকটি থানাও পর্যাপ্ত বাহিনী নিয়ে নিজেদের এলাকায় টহল দেবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.