কেএল রাহুলকে তাঁর ধমক দেওয়ার দৃশ্য প্রকাশ্যে আসার পরেই সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে সঞ্জীব গোয়েন্কাকে নিয়ে। লখনউ সুপার জায়ান্টসের মালিককে একহাত নিতে ছাড়েননি কেউ। সমালোচনার মুখে এ বার ইনস্টাগ্রামের ‘কমেন্টস’ বিভাগ বন্ধ করে দিলেন গোয়েন্কা।
বুধবার রাতের ওই ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই সমর্থকেরা রেগে যান। ক্ষোভ গিয়ে পড়ে গোয়েন্কার সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলির উপর। ইনস্টাগ্রামে বহু মানুষ প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। চাপের মুখে শেষমেশ ‘কমেন্টস’ বন্ধ করে দেন কলকাতার শিল্পপতি। তবে এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) এখনও মন্তব্য পোস্ট করা যাচ্ছে। সেখানে সমর্থকেরা তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
বুধবার ম্যাচের পরেই গোয়েন্কা নেমে আসেন মাঠে। বাউন্ডারির ধারে দাঁড়িয়ে রাহুলকে হাত নেড়ে নেড়ে অনেক কিছু বোঝাতে থাকেন। তাঁর আচরণ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, দলের এই হারে তিনি খুশি নন। কিছু কিছু ক্রিকেটারের দিকে হাত দেখিয়ে ইঙ্গিত করতে থাকেন গোয়েন্কা। তাঁর গলার স্বরও যে বেশ উঁচু ছিল, সেটাও বোঝা গিয়েছে ভিডিয়ো দেখে। গোয়েন্কার দাপটের সামনে রাহুল কিছু বলতেই পারেননি। তিনি চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিলেন। গোয়েন্কার কথা শুনছিলেন। পরে কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকেও বেশ কিছু কথা বলেন গোয়েন্কা। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মাত্রই সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। ভারতীয় দলের একজন ক্রিকেটারের প্রতি দলমালিকের এমন আচরণে খুশি হতে পারেননি সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি, দলের হারে মালিকের রাগ হতেই পারে। সেটা তো সাজঘরে ফিরেও বোঝানো যেত। মাঠের মধ্যে সবার সামনে এ ভাবে রাহুলকে ‘অপমান’ করার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
রাহুলের প্রতি গোয়েন্কার ব্যবহার ভাল ভাবে নেননি প্রাক্তন ক্রিকেটারেরাও। জিয়ো সিনেমার স্টুডিয়োয় হাজির ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা অধিনায়ক গ্রেম স্মিথ। তিনি প্রকাশ্যে গোয়েন্কার রাগ দেখে অবাক। বলেছেন, “মানছি যে উনি দলের মালিক। দলের প্রতি আবেগপ্রবণ হওয়ারই কথা। এই মুহূর্তে একটা ম্যাচ খেলে ওরা বিধ্বস্ত। ক্রিকেটারেরাও আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এমন অবস্থায়, এ ধরনের কথাবার্তা রুদ্ধ দ্বারে হওয়া উচিত ছিল।” তিনি আরও বলেছেন, “এখন চারদিকে এত ক্যামেরা রয়েছে। কোনও কিছুই দেখাতে ছাড়ছে না। কেএল রাহুল এ বার সাংবাদিক বৈঠকে যাবে। আরও অনেক কাজ রয়েছে ওর। এখন তো কোনও আলোচনার দরকারই নেই।” গোয়েন্কার আচরণে খুশি হতে পারেননি বিরাট কোহলির বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন কোচ মাইক হেসনও। তিনি বলেছেন, “ওঁর (গোয়েন্কার) কি মাথা ঠিক করে কাজ করছে না! নিজের চিন্তাভাবনার কথা বলছেন, সেটা তো বুঝলাম। উল্টো দিকে কেএলও তো বলছে, ‘আপনি অপেক্ষা করুন। আমাদের কী করতে বলছেন, সেটা মাথায় ঢুকছে না’।”