কিছুদিন আগেই রাজ্যপালকে ‘কেন্দ্রের মুখপত্র’ বলে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার কলকাতায় ফিরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন রাজ্যপাল। সেই সাংবাদিক সম্মেলনেই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের জবাবে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বলেন, ‘সংবিধানই আমাকে অধিকার দিয়েছে কেন্দ্রের মুখপত্র হিসেবে কাজ করার।’
বিমানবন্দর থেকে রাজভবন আসার পথে তাঁর চোখে পড়ে একাধিক মুখ্যমন্ত্রীর কাটআউট। এই বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে আসার পথে পর পর ওনার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের) কাট আউট দেখি। কই আমার তো কোনও কাট আউট দেখা যায় না।’
রাজ্যপাল রাজ্যের ‘অতিথি’ হিসাবে এসেছেন বলে কটাক্ষ করেছিল শাসক দলের বহু নেতা-মন্ত্রীরা। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রসঙ্গে রাজ্যপাল বলেন, ‘আমি রাজ্যে সাংবিধানিক পদে জনতার সেবা করতে এসেছি। আমি এই রাজ্যে অতিথি হয়ে আসিনি।’
রাজ্যপাল পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই বহু সময়েই নানা প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন জগদীপ ধনকড়। এই বৈঠক ভাল চোখে দেখে নি শাসক দল। রাজ্যপাল ‘সমান্তরাল প্রশাসন’ চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়েই রাজ্যপাল এ দিন জানান, ‘আমি সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছি এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বহু চিঠি লিখেছি। ওনার যদি কোনও সমস্যা হয় তা আমাকে সরাসরি বলার জন্যেও বলেছি। ৫০দিন হয়ে গেলেও মুখ্যসচিব এখনও আমার সঙ্গে দেখা করেননি।’
গত রবিবারই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ‘সমান্তরাল প্রশাসন’ চালানোর নালিশ জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার শীতকালীন অধিবেশনে এই বিষয়টি তুলে ধরবেন বলেও জানিয়েছিলেন।
পরিকল্পনামাফিক সোমবারই রাজ্যসভায় এই বিষয়ে সরব হন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। রাজ্যের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় তিনি অভিযোগ এনে বলেন, ‘রাজ্যপাল কেন্দ্রের হয়ে কাজ করছেন। রাজ্যপাল হয়ে এসে তিনি রাজনীতি করছেন।’
এরপরেই তিনি রাজনীতি করলে রাজ্যপালকে রাজভবন ছাড়ার কথাও বলেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল রাজনীতি করতেই পারেন কিন্তু রাজনীতি করলে রাজভবন ছাড়ুন।’
তৃণমূল নেতা-মন্ত্রী-সাংসদদের সমস্ত জবাবই আজ অর্থাৎ সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ফিরিয়ে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।