সুপ্রিম কোর্টে ৫২৫০ হয়ে গেল ৮৮৬১! অযোগ্য শিক্ষকদের সংখ্যা বদল কেন, ব্যাখ্যা নেই সিদ্ধার্থের

সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে সাময়িক স্বস্তি পেলেও যত দিন না স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) যোগ্যদের তালিকা প্রমাণ-সহ প্রকাশ করবে, তত দিন লড়াই চালিয়ে যেতে চান শিক্ষকেরা।

মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের রায়ে স্পষ্ট, ১৬ জুলাই পর্যন্ত চাকরি বহাল থাকবে ২০১৬-তে এসএসসির চাকরি পাওয়া শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের। এসএসসি ইতিমধ্যেই ৫২৫০ জনের বেআইনি নিয়োগের কথা বলেছিল। আর এ দিন সিবিআই-কে উদ্ধৃত করে এসএসসি সুপ্রিম কোর্টকে বলেছে, ২০১৬ সালে বেআইনি নিয়োগ হয়েছে ৮৮৬১টি। কী করে অযোগ্যদের সংখ্যা পাল্টে গেল, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি।

২০১৬-তে বেআইনি নিয়োগ নিয়ে এসএসসি-র কাছ থেকে অযোগ্যদের তালিকা চেয়ে না-পেয়ে সে বারের গোটা প্যানেলই বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তার বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন এসএসসি, রাজ্য সরকার এবং চাকরি হারা শিক্ষকেরা। এমনই এক শিক্ষিকা স্বর্ণালী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘থাকার কথা ক্লাসরুমে, আর থাকতে হচ্ছে কোর্ট রুমে। এই সম্মানহানি পুরোপুরি বন্ধ হোক।’’ শিক্ষক বৃন্দাবন ঘোষের কথায়, ‘‘এসএসসি যদি হাই কোর্টের কাছে বলত, তারা যোগ্য ও অযোগ্যর তালিকা দিতে পারবে, তা হলে আমাদের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যেতে হত না।’’

এ দিন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ২০১৬-তে চাকরি পাওয়া সবাইকেই মুচলেকা দিয়ে বলতে হবে, তাঁদের নিয়োগ ‘অবৈধ’ প্রমাণিত হলে, টাকা ফেরত দেবেন। শিক্ষক মেহবুব মণ্ডলের দাবি, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার সময়ে ইতিমধ্যেই আমরা এই মুচলেকা দিয়েছি। বলেছি, এর মধ্যে মিথ্যা থাকলে সুপ্রিম কোর্ট যা শাস্তি দেবে তা মাথা পেতে নেব।’’

সুপ্রিম কোর্টের শুনানি শেষে এ দিন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে বসা চাকরি খোয়ানো শিক্ষকেরা অনশন তুলে নেন। মৌমিতা সরকার বলেন, ‘‘এসএসসি বলছে, তাদের কাছে সব ওএমআর শিট নেই। সেটা ঠিক নয়। নবম-দশমের শিক্ষকদের কাছে ওএমআর শিট রয়েছে। যাঁদের কাছে ওএমআর শিট নেই, তাঁরা তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চেয়ে সেই ওএমআর শিট পাচ্ছেন। সেই ওএমআর শিট কোথা থেকে দিচ্ছে এসএসসি?’’

এ দিন শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরে তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের উদ্যোগে তমলুক শহরে অবস্থান-বিক্ষোভ উঠে গিয়েছে। তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বিজন সরকার বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের মুখে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তাড়াহুড়ো করে রায় দিয়েছিল।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.