সোমবার চতুর্থ দিনে পড়ল পার্শ্বশিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি। এর মধ্যেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চারজন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের ভর্তি করা হয়েছে বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালে। পার্শ্ব শিক্ষক আন্দোলনের নেতা ভাগীরথ ঘোষ জানিয়েছেন, একজন শিক্ষিকার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, এখনও সরকারের তরফে কোনও তৎপরতা দেখা যায়নি। তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনড়।
বেতন কাঠামো তৈরি থেকে পূর্ণ শিক্ষকের মর্যাদা—একাধিক দাবিতে অনশনে বসেছেন পার্শ্বশিক্ষকরা। সংগঠনের অন্যতম নেতা ভাগীরথ ঘোষ বলেন, “২০০৯ সালে রানি রাসমণি রোডে আমাদের একটি সমাবেশে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তিনি সরকারে এলে প্রথমে আমাদের স্থায়ীকরণের কাজ করবেন। কিন্তু তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বের আট বছর হয়ে গেল। এখনও কথা রাখেননি তিনি।”
রাজ্যে মোট ৪৮ হাজার পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন। বিকাশ ভবনের সামনের অবস্থানে যোগ দিয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষক। ৪০ জন অনশন করছেন। এর মধ্যে ৮ জন মহিলা। শিক্ষক সংগঠনের বক্তব্য, গত ১১ তারিখের পরেও আমরা চেষ্টা করেছিলাম সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার। কিন্তু সরকারের কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই বলে দাবি তাঁদের।
গত জুলাই মাসে দীর্ঘ অনশনের পর জয় পেয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। দাবি ছিল গ্রেড পে বাড়াতে হবে। শেষমেশ আন্দোলনের তীব্রতার সামনে মাথা ঝোঁকাতে হয় সরকারকে। ২৬০০ টাকা থেকে বেড়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড হয় ৩৬০০টাকা। কিন্তু তারপর অন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে গত সপ্তাহেই বাঘাযতীন এলাকা শিক্ষক আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল। শিক্ষক মিছিল শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির দিকে এগোতে শুরু করলে তা আটকে দেয় পুলিশ। তা নিয়েও উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রেফতারও করা হয় শিক্ষক আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতা-নেত্রীকে। এবার আন্দোলনের ময়দানে পার্শ্বশিক্ষকরা।
পার্শ্বশিক্ষক আন্দোলনের দাবিসনদের মধ্যে যেমন রয়েছে বেতন কাঠামোর পুনর্গঠন, তেমনই রয়েছে পার্শ্বশিক্ষিকাদের মাতৃকালীন ছুটির বিষয়টি। একইসঙ্গে তাঁদের দাবি, স্কুলের পরিচালন কমিটিতেও তাঁদের প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে। উস্থির আন্দোলনের সময়ে পার্থবাবু বলেছিলেন, “অন্যায্য দাবি সরকারের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। কিন্তু পার্শ্বশিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন তৎকালীন বিরোধীনেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতিকে হাতিয়ার করেই।