উষ্ণতার পারদ ক্রমশ চড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে অস্বস্তিও। দিনের বেলায় রাস্তায় পা রাখলেই হচ্ছে হাঁসফাস অবস্থা। যা গরম পড়েছে, তাতে সুস্থ থাকা সত্যিই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, গরম নাকি আরও বাড়বে। তীব্র গরমে অস্বস্তি যেমন রয়েছে, তেমনই অনেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এই সময়। তার উপর এই সময় ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ারও প্রকোপ বাড়ে। সুস্থ থাকতে হলে কিন্তু বার বার খাওয়াদাওয়া নিয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। তেলমশলাদার খাবার, বাইরের খাবার, ভাজাভুজি খাওয়া চলবে না একেবারেই। রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করতে তী কী খেতেই হবে, জেনে নিন।
তেতো খাবার: গরমের মরসুমে ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রতি দিন খাবারের পাতে রাখুন তেতো। হয় নিমপাতা, নয়তো উচ্ছে। এ সবের অ্যান্টি-ভাইরাল ও অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান শরীর চাঙ্গা রাখে ও এ সময়ে বাতাসে ভেসে বেড়ানো রোগ-জীবাণুর সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে।
লবঙ্গ-দারচিনি-কাঁচা হলুদ: রান্নায় লবঙ্গ ও দারচিনি বেশি করে ব্যবহার করুন। এই সব মশলার অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। এই মশলা দিয়ে চা করেও খেতে পারেন। প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খান। রাতে দুধে কাঁচা হলুদ গুলেও খেতে পারেন।
পর্যাপ্ত প্রোটিন: শরীর গড়তে গেলে প্রোটিন ছাড়া চলবে না। খাবার পাতে উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজ, যে কোনও রকমের প্রোটিন রাখুন রোজ। মাছ, মাংস, সয়াবিন, মুসুর ডাল, ডিম এ সব থেকে পাওয়া পুষ্টিগুণ শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করবে।
সবুজ শাকসব্জি ও ফল: ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচতে, শরীরকে স্বাভাবিক শক্তির জোগান দিতে, ভিটামিন সি ও খনিজ পদার্থের জোগানে যাতে ঘাটতি না পড়ে, সে সবের দিকেও এ সময় নজর দিতে হবে। প্রতি দিন নিয়ম করে অন্তত একটা মরসুমি ফল খান। খাওয়ার পাতে সঙ্গে রাখুন পর্যাপ্ত সবুজ শাকসব্জি।
টক দই: টক দইয়ের ফারমেন্টেড এনজাইম খাবার হজমের জন্য ভীষণ উপযোগী। টক দইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদান লিভারকে যেমন সুস্থ রাখে, তেমনই এর জেরে কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেকেই দুধ খেতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন দইয়ের উপর। দুধের তুলনায় দই অনেক বেশি সহজপাচ্য। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করার ক্ষেত্রেও দইয়ের জবাব নেই। শরীর যত টক্সিনমুক্ত হবে, ততই সুস্থ থাকবেন।
গরমে শরীরের প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আর কী কী করতে হবে?
১) বেশি করে জল খান। জলের পাশাপাশি দইয়ের ঘোল, ছাতুর শরবত, আখের রস, ডাবের জল খেতে পারেন। তবে নরম পানীয়, সোডাযুক্ত পানীয়ে চুমুক নয়।
২) ঘুমের সঙ্গে আপস নয়। পর্যাপ্ত ঘুম চাই শরীরের।
৩) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। বাইরের জল, কাটা ফল, রাস্তার ধারের খাবার খাবেন না। হাত বার বার ধোয়ার অভ্যাস শুরু করুন।
৪) শরীরচর্চা করুন। জিমে না গিয়ে বাড়িতে যোগাসনের অভ্যাসও করতে পারেন।