পড়াশোনার ধরন এখন অনেক বদলেছে। তার সঙ্গে বদলে গেছে প্রশ্নের ধরণ। সংক্ষিপ্ত কিংবা অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের সংখ্যা এখন অনেক বেশি। এমনকি তুলনামূলক আগের থেকে সহজ প্রশ্ন। কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছে মাধ্যমিকে অনুর্ত্তীণের সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। প্রায় দেড় লক্ষের বেশি পরীক্ষার্থী এবছর অকৃতকার্য হয়েছে। সূত্রে খবর, ২০২৪- এ ফেলের সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৭ হাজার। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়ে ২০২৩ সালে মাধ্যমিকে ফেল করেছিল ১ লক্ষ ১১ হাজার। এবার সেই সংখ্যাটা আরো বেশি। যেখানে সংক্ষিপ্ত ও অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের আধিক্য রয়েছে। তারপরেও সেখানে এতজন পড়ুয়া কিভাবে ফেল করল? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে কোভিডের সময় প্রায় দু’বছর বন্ধ ছিল পঠন পাঠন। পড়ুয়ারা স্কুলে যায়নি। ঘরে বসে অনলাইনে ক্লাস হলেও তাতে সেভাবে পড়াশোনা আদৌ কতটা হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশেষজ্ঞরা নিয়োগ দুর্নীতির প্রভাবও এক্ষেত্রে উড়িয়ে দিতে পারছেন না।
অনেকেই বলেছেন, এ যুগেও মাধ্যমিকে ১ লক্ষ ৫৭ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী ফেল। সেখানে সিবিএসসি কিংবা আইসিএসসি’তে অকৃতকার্যের সংখ্যা নগণ্য। রাজ্যে একদিকে মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অকৃতকার্যের সংখ্যা। যেটা যথেষ্ট উদ্বেগজনক ঘটনা।
এর কারণ হিসেবে অনেকেই বলেছেন, প্রাথমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পাশ ফেল নেই। এতে ফেলের ভয় থাকে না। দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলিতে শূন্য পদে নিয়োগ নেই। একাধিক জায়গায় দেখা যায় শিক্ষকের অভাবে স্কুল ধুঁকছে। সততার সঙ্গে নিয়োগ না হওয়ার ভুরি ভুরি অভিযোগ। যোগ্য শিক্ষকের অভাব রয়েছে। তার উপর দিনের পর দিন ভোট বা গরম নানা কারণেই বন্ধ রাখা হচ্ছে পঠন পাঠন। পড়াশোনার থেকে বেশি সরকারি বিভিন্ন স্কিমে বৃত্তি, সাইকেল, ট্যাব, নিম্নমানের স্কুল ইউনিফর্ম ইত্যাদি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। দৈনন্দিন পঠন-পাঠনের উন্নতি এবং পরিচালনা বিষয়ক কোনো গুরুত্ব না দেওয়ার কারণেই এই ফল বলে মত অনেকেরই।