সোমবার ভোরে বড়বাজারের প্লাস্টিকের গুদামে আগুন লাগল। ঘটনাস্থলে প্রথমে দমকলের সাতটি ইঞ্জিন এসে পৌঁছয়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়াতে পরে আরও আটটি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর যোগ দেয়। গুদামে দাহ্য পদার্থ এবং প্লাস্টিকের সামগ্রী থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার ভোররাতে আচমকাই ওই গুদামে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বড়বাজারের নাখোদা মসজিদের কাছেই গুদামটি ছিল। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয়েরা বেরিয়ে আসেন। আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। খবর দেওয়া হয় দমকল এবং পুলিশকে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন।
ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে দেরি হয় দমকলকর্মীদের। যে গুদামে আগুন লেগেছে, সেখানে পৌঁছতে পারেনি দমকলের ইঞ্জিন। দূর থেকেই হোসপাইপের মাধ্যমে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। গুদামে রাসয়নিক পদার্থ মজুত থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। গুদামের পাশের একটি বহুতলেও সেই আগুন ছড়ায়। কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় এলাকা। অনেক দূর থেকেই আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায়।
সপ্তাহের প্রথম দিনে খাস কলকাতায় এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গুদামের পাশের বহুতল থেকে বাসিন্দাদের উদ্ধার করে বাইরে বার করে আনা হয়েছে। কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা সম্ভব হয়নি। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় কাউন্সিলর এবং দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু।
কী ভাবে আগুন লাগল? দমকলের প্রাথমিক অনুমান শর্ট সার্কিটের কারণেই এই অগ্নিকাণ্ড। তবে তদন্ত না করে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানান দমকলের এক আধিকারিক। ঘিঞ্জি বসতি এলাকায় এমন একটি গুদাম করার অনুমতি কে দিল, গুদামের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুজিত বলেন, ‘‘দমকলকর্মীদের ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন কুলিং প্রসেস চলছে। কী ভাবে আগুন লাগল, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। তবে এখন সবচেয়ে আগে আগুন পুরোপুরি নেভানোই আমাদের লক্ষ্য। তার পর আমরা খতিয়ে দেখব ওই গুদামে কাগজপত্র ঠিকঠাক ছিল কি না, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে কি না।’’
ঘটনাস্থলে আসেন উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। এই অগ্নিকাণ্ডের জন্য দমকল এবং পুলিশের দিকেই আঙুল তুললেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ এবং দমকল কেন এত দিন ব্যবস্থা নেয়নি? সকলকে জবাব দিতে হবে।’’ তাপস ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর এবং তাঁর অনুগামীরা তাপসকে দেখে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। তবে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।