কোহলিদের সামনে ব্যর্থ হায়দরাবাদের ব্যাটিং, ছয় ম্যাচ পর জয়ের মুখ দেখল ‘লাস্ট বয়’ বেঙ্গালুরু

চলতি আইপিএলে দুরন্ত ফর্মে থাকা সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ব্যাটিং লাইন আপ ব্যর্থ। ঘরের মাঠে পয়েন্ট তালিকার ‘লাস্ট বয়’ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে হারতে হল তাদের। প্রথমে ব্যাট করে ২০৬ রান করেছিল বেঙ্গালুরু। সেই রান তাড়া করতে পারল না হায়দরাবাদ। ৩৫ রানে ম্যাচ জিতলেন বিরাট কোহলিরা। চলতি আইপিএলে ছয় ম্যাচ হারার পরে জিতল বেঙ্গালুরু।

হায়দরাবাদের ব্যাটিং লাইন আপের কথা মাথায় রেখে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ফাফ ডুপ্লেসি। শুরুটা ভাল করেন দুই ওপেনার কোহলি ও ফাফ। দ্রুত রান তুলছিলেন তাঁরা। কিন্তু পাওয়ার প্লে-র মধ্যে আবার উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু। ১২ বলে ২৫ রান করে টি নটরাজনের বলে আউট হন ডুপ্লেসি।

প্রথম পাঁচ ওভারে পাঁচ জন বোলারকে দিয়ে বল করেন হায়দরাবাদের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তিন নম্বরে নামা উইল জ্যাকস এই ম্যাচে রান পাননি। লেগ স্পিনার মায়াঙ্ক মারকন্ডের বলের গতি বুঝতে না পেরে ৬ রান করে বোল্ড হন তিনি। পাওয়ার প্লে-র পরে রানের গতি কিছুটা কমে গিয়েছিল। সেখান থেকে দলকে টানেন চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা রজত পাটীদার। মারকন্ডের এক ওভারে পর পর চারটি ছক্কা মারেন তিনি। ১৯ বলে অর্ধশতরান করেন পাটীদার। কিন্তু পরের বলেই আউট হন তিনি। আইপিএলে নিজের ১০০তম ম্যাচে পাটীদারকে আউট করেন জয়দেব উনাদকাট।

কোহলিও নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। তার পরেই অবশ্য উনাদকাটের বলে ৫১ রানের মাথায় আউট হয়ে যান তিনি। বলের গতির হেরফের করছিলেন উনাদকাট। ফলে খেলতে সমস্যা হচ্ছিল বেঙ্গালুরুর ব্যাটারদের। মহিপাল লোমরোরকেও ফেরান হায়দরাবাদের বাঁ হাতি পেসার।

বেঙ্গালুরুর ইনিংসকে ২০০ পার করার দায়িত্ব গিয়ে পড়ে ক্যামেরন গ্রিন ও দীনেশ কার্তিকের উপর। গ্রিন ভাল খেলছিলেন। ডেথ ওভারে ভাল বল করছিলেন হায়দরাবাদের পেসারেরা। বড় শট খেলার জায়গা দিচ্ছিলেন না। ১৯তম ওভারে কামিন্সের বিরুদ্ধে হাত খোলেন বেঙ্গালুরুর দুই ব্যাটার। সেই ওভারে ওঠে ১৫ রান। তবে সেই ওভারেই কার্তিকের উইকেটও হারায় বেঙ্গালুরু। শেষ ওভারে নটরাজন দেন ১২ রান। ২০ ওভারে ২০৬ রানে শেষ হয় বেঙ্গালুরুর ইনিংস। ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন গ্রিন।

২০৭ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি হায়দরাবাদের। প্রথম ওভারেই উইল জ্যাকসের বলে ১ রানের মাথায় আউট হন ট্রেভিস হেড। অপর ওপেনার অভিষেক শর্মা মারমুখী মেজাজে ছিলেন। ১৩ বলে ৩১ রান করে যশ দয়ালের বলে বড় শট মারতে গিয়ে ফেরেন অভিষেক। স্বপ্নিল সিংহের ফুলটস ব্যাটে লাগাতে না পেরে ৭ রানের মাথায় ফিরতে হয় আইডেন মার্করামকে। হেনরিখ ক্লাসেনকেও আউট করেন স্বপ্নিল। চলতি আইপিএলে প্রথম বার পাওয়ার প্লে-তে ৪ উইকেট হারাল হায়দরাবাদ।

লক্ষ্য বড় হওয়ায় দ্রুত রান তোলা ছাড়া উপায় ছিল না হায়দরাবাদের। সেই চেষ্টা করতে দিয়ে নীতীশ রেড্ডি ও আব্দুল সামাদও আউট হয়ে যান। দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার সব দায়িত্ব গিয়ে পড়ে শাহবাজ় আহমেদ ও অধিনায়ক কামিন্সের কাঁধে। লড়াই থামায়নি হায়দরাবাদ। আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন কামিন্স। একের পর এক বড় শট খেলেন তিনি।

ক্যামেরন গ্রিন বল করতে এসে নিজের প্রথম ওভারেই কামিন্সকে আউট করেন। ১৫ বলে ৩১ রান করে অধিনায়ক আউট হওয়ার সঙ্গেই হায়দরাবাদের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। শাহবাজ় আহমেদ ও ভুবনেশ্বর কুমার লড়াই করলেও দলকে জেতাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭১ রানে শেষ হয় হায়দরাবাদের ইনিংস। চলতি আইপিএলে এই প্রথম বার আগে ব্যাট করে ম্যাচ জিতল বেঙ্গালুরু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.