২৬ হাজার চাকরিহারাকে এপ্রিল মাসের বেতন দেবে রাজ্য সরকার, শ্রম আইনে সিদ্ধান্ত শিক্ষা দফতরের

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে যে ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের এপ্রিল মাসের বেতন দেওয়া হবে। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, শ্রম আইন অনুসারে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, যত দিন সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা চলবে, তত দিন কারও বেতন বন্ধ করা হবে না।

চাকরি বাতিলের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। শিক্ষা দফতরের পাশাপাশি স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফেও পৃথক ভাবে মামলা করা হয়েছে। ফলে বিষয়টি বর্তমানে শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন।

শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে হেতু মামলাটি বিচারাধীন এবং ওই ২৫,৭৫৩ জন প্রত্যেকেই এপ্রিল মাস জুড়ে কাজ করেছেন, তাই তাঁদের বেতন দেওয়া হবে। শ্রম আইন অনুসারে, কেউ কাজ করলে তার উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিতে হয়। সেই আইন অনুসরণ করেই চাকরিহারাদের এপ্রিলের বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।

উল্লেখ্য, এসএসসিতে নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় সোমবার ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করা হচ্ছে। যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে চাকরি পেয়েছিলেন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের সম্পূর্ণ বেতন ফেরত দিতে হবে। বছরে ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ ওই বেতন ফেরত দিতে হবে। পাশাপাশি এই মামলায় সিবিআইকে তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেছে আদালত। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সংস্থা সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। এমনকি, রাজ্য মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধেও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হাই কোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। তাদের যুক্তি, পাঁচ হাজার চাকরিপ্রাপকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বাকি ২০ হাজার শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মী কেন ভুক্তভোগী হবেন? কেনই বা তাঁরা শাস্তি পাবেন? কেন সম্পূর্ণ নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া হবে? যোগ্য চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে মামলা করা হয়েছে শীর্ষ আদালতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.